ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা না করার অনুরোধ পুলিশের
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা না করার জন্য জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
রোববার (৭ এপ্রিল) বিকেলে সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ঈদের সময় ঢাকা শহরে বিশেষ চাপ দেখা যায়। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নাড়ির টানে মানুষজন ঈদের ছুটিতে যাতায়াত করে। আমরা লক্ষ্য করেছি ইতোমধ্যে ঈদযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি আগামীকাল থেকে ঈদের যাত্রীদের বড় চাপ শুরু হবে। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা থেকে বাহিরে যাওয়ার যাত্রীদের একটা চাপ থাকবে। জনগণের ঈদযাত্রা যেন স্বস্তিদায়ক হয় সেজন্য পুলিশের সব ইউনিট একযোগে কাজ করছে। ঈদ যাত্রীদের যাত্রা নিরাপদ করতে পুলিশের সব সদস্য প্রস্তুত রয়েছে এবং একযোগে কাজ করছে। মাঠ পর্যায়ে পুলিশের যেসব সদস্য কাজ করছে তাদের তদারকি করছে আমাদের সিনিয়র অফিসাররা। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় সমন্বয়ে সভা করেছে। এছাড়া পুলিশও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয়ে সভা করছে।
এসময় তিনি ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমরা যাত্রীদের বলতে চাই আপনারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো বাহনের যাত্রী হবেন না। আমরা সবাই ঈদের আনন্দ আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করার জন্য নাড়ির টানে যাত্রা করছি। আমরা কেউ দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে যেতে চাই না। অনেককে দেখা যায় ট্রাকসহ বিভিন্নভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা করে। তাই আমরা সবার কাছে নিবেদন করব তারা কেউ যেন ঝুঁকিপূর্ণভাবেই ঈদযাত্রা না করেন।
তিনি বলেন, মহাসড়কে নসিমন, করিমনসহ ভটভটি জাতীয় বাহনের চলাচল বন্ধ থাকবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। রাস্তায় আমাদের মোবাইল কোর্ট থাকবে। বেপরোয়া গতিতে যেন গাড়ি চালানো না হয় সেজন্য আমরা সব চালককে অনুরোধ জানাব। চালকদের আরও বলব বিনা প্রয়োজনে আপনারা ওভারটেকিং করবেন না।
আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটন কেন্দ্রে জনসমাগম হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পর্যাপ্ত টুরিস্ট পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। টুরিস্ট পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশসহ পুলিশের সব ইউনিট সুষ্ঠু সমন্বয় করে কাজ করবে।
ফাঁকা বাসার নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ প্রধান জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকেই বাড়ি যাবেন। ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাড়িতে কেউ যাতে অপরাধ সংগঠিত না করতে পারে সেজন্য আপনারা ফ্ল্যাট বাড়ির নিরাপত্তার জন্য পাহারাদার নিয়োজিত করেন। অনেক সময় দেখা যায় অপরাধ সংগঠিত হলে সিসিটিভির ক্যামেরা অন্যদিকে মুখ করে থাকে। সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক আছে কিনা এবং যেদিকে মুখ করে থাকার কথা সেদিকে আছে কিনা তা আপনারা চেক করে নেবেন। যাতে করে অপরাধ সংগঠিত হলে পাহারাদার না ধরতে পারলেও আমরা যেন গিয়ে অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারি।
জাল টাকার বিষয়ে সতর্ক অবলম্বন করার কথা বলে আইজিপি কলেজ, ঈদের সময়ে দ্রুত কেনাকাটা হয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়। ফলে জাল টাকার কারণে অনেকে প্রচারিত হন। তাই জাল টাকার বিষয়ে বিশেষ সবাই সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং পুলিশকে জানাবেন। এছাড়া কোনো প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন করে আপনারা পুলিশ হিসাবে নিতে পারবেন। টাকা নিরাপদে সতর্কতার সঙ্গে পরিবহন করুন। প্রয়োজনে টাকা পরিবহনের সময় পুলিশের সহযোগিতা নিন। টাকা পরিবহনে আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা প্রস্তুত আছি।
ছিনতাই নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ঈদের সময় ছিনতাইকারীরা যেমন তাদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি করে তেমনি আমরাও আমাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছি। ছিনতাই নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা কাজ করছি। প্রতিটি ছিনতাইয়ের অভিযোগের বিষয়ে আমরা যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এই দেশে একটা সময় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের হোলি খেলা চলছিল। আমরা সবার সঙ্গে মিলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। একইভাবে আমরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ছিনতাইকারীদের আমরা আইনের আওতায়ন আনছি। অপরাধ করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এমএসি/জেডএস