বাসে ঈদযাত্রা : যাত্রীরা বলছেন ভাড়া বেশি, কর্তৃপক্ষ বলছে কম
সরকার-নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম মূল্যে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন দূর পাল্লার পরিবহনের টিকিট বিক্রেতারা। তবে যাত্রীদের অভিযোগ, আগের তুলনায় বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালের বিভিন্ন পরিবহনের টিকিট কাউন্টার ব্যবস্থাপক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘিরে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আপাতত যাত্রী কম থাকলেও অনেক যাত্রী টিকিটের খোঁজে টার্মিনালে এসেছেন। কোনো কোনো কাউন্টারে টিকিট না থাকলেও কেউ কেউ ডেকে ডেকে টিকিট বিক্রি করছেন। তবে বেশি দামে টিকিট বিক্রির বিষয়টি কাউন্টারের কর্মচারীরা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছু টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। তবে বিটিআরসির নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন
বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন আব্দুল মতিন। আগামী সোমবার পরিবার নিয়ে নিজ বাড়ি খুলনায় যাবেন বলে গাবতলী বাস কাউন্টারে টিকিটের খোঁজে আসেন সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারে। তিনি বলেন, আমার পরিবারের চার সদস্য নিয়ে আগামী সোমবার খুলনায় গ্রামের বাড়িতে যাব। এজন্য টিকিট কাটতে এসেছি। কিন্তু টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে, আগামী ৭ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত টিকিট নেই। খুলনার রুটে সোহাগ পরিবহন এখনো টিকিটের দাম বাড়ায়নি।
গাবতলী বাস টার্মিনালে টিকিট কাটতে এসেছেন সোহরাব হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আমার বাড়ি চুয়াডাঙ্গাতে। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে, তবে ভাড়া বেশি দাবি করছে কাউন্টারগুলো। এখন ফেরি ঘাটেও সেরকম জ্যাম নেই। তারপরও ভাড়া বেশি চাওয়া হচ্ছে। অন্যান্য সময় আমরা সাড়ে ৬শ টাকায় গেলেও ঈদ আসলেই বাস ভাড়া বেড়ে যায়। তারপরও তো আমাদের বাধ্য হয়ে যেতে হয়।
টিকিটের দাম প্রসঙ্গে সোহাগ কাউন্টারের মো. সোহাগ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের টিকিটের দাম বাড়েনি। আগে যেই দামে টিকিট বিক্রি করতাম এখনো সেই একই দামে বিক্রি করছি। তবে ঈদের দাম শুরু হয়নি। আগামী রোববার থেকে যাত্রীদের চাপ শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।
দেশ ট্রাভেলস কাউন্টারের ম্যানেজার তুষার জানান, গাবতলী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী ৮৩৮ টাকা গুনতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু আমরা ৮ টাকা কমিয়ে ৮৩০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রত্যেকটা গাড়িই পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাসের প্রায় সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
দর্শনা ডিলাক্সের কাউন্টারেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। কাউন্টারের কর্মচারী শরিফুল জানান, যাত্রীর চাপ কিছুটা কম। তবে প্রতিদিনই টিকিট বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে আগামী রোববার থেকে টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। যারা এখন আসছে তারা সবাই সহজেই টিকিট পাচ্ছে। তবে আগামীকাল থেকে হয়তো আর টিকিট পাওয়া যাবে না। কারণ, আগামীকাল শুক্রবার টিকিট বিক্রির চাপ ব্যাপকভাবে বাড়বে। তবে ঈদ উপলক্ষ্যে ভাড়া কিছু বাড়তি নেওয়া হচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
জে লাইন কাউন্টারের ম্যানেজার মো. হাকিম জানান, আমাদের গাড়ির টিকিট আছে। যাত্রীরা চাইলেই কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। তবে আপাতত যাত্রীর চাপ কম আছে। তবে সকাল থেকে তিনটি গাড়ি ছেড়ে গেছে, যেগুলো পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে গেছে।
ভাড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের নির্ধারিত ভাড়া থেকে ২৭ টাকা ভাড়া কম নিচ্ছি আমরা। সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী একজন যাত্রীকে ৭৭৭ টাকা ভাড়া গুনতে হবে। কিন্তু আমরা ঈদ উপলক্ষ্যে ১০০ টাকা ভাড়া বাড়িয়েও সরকারের নির্ধারিত ভাড়া থেকে ২৭ টাকা কম করে ৭৫০ টাকা নিচ্ছি।
এসআর/এমজে