এপ্রিলে স্বাভাবিক হচ্ছে গ্যাস সরবরাহ
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহে নিয়োজিত সামিট গ্রুপের ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এসএলএনজি) মেরামত শেষে দেশে আসছে। সিঙ্গাপুরের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষে জাহাজটি ৩১ মার্চের মধ্যেই কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকায় বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাবে। এপ্রিলের মধ্যে দেশে গ্যাস সরবরাহ বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীতে দুটি টার্মিনাল দিয়েই আমদানিকৃত এলএনজি সরবরাহ দেওয়া হয়। জাহাজে করে এলএনজি আসে। ভাসমান টার্মিনালে ভিড়িয়ে জাহাজে থাকা এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করা হয় টার্মিনালে। টার্মিনাল দুটি হল মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির ‘এক্সিলেন্স’ ও দেশীয় সামিট প্রাইভেটের মালিকানাধীন ‘সামিট’। এ দুই টার্মিনালের রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটি দৈনিক ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।
গত অক্টোবরে সংস্কারের জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হয় এক্সিলেন্সকে। এতে দুই টার্মিনালের একটি দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দেয়। রান্নায় ভোগান্তি, সিএনজি ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের দীর্ঘ সারি, শিল্প-কারখানায় উৎপাদন বিঘ্ন ঘটতে শুরু করে।
এরমধ্যে গত ৭ জানুয়ারি সংস্কার শেষে মহেশখালীতে ফিরে এক্সিলেন্স। এরপর এই এলএনজি টার্মিনালের কমিশনিং শুরু হয়। ত্রুটি সারিয়ে গত ২২ জানুয়ারি থেকে এক্সিলেন্স টার্মিনাল দিয়ে ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। তবে একই সময়ে সংস্কারের জন্য সামিটের টার্মিনাল সিঙ্গাপুর পাঠানোয় গ্যাস সংকট রয়ে যায়।
এলএনজি টার্মিনাল দুটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা- রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। এই সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন- সামিটের টার্মিনালটি ফিরে এলে দুটি টার্মিনাল দিয়েই এলএনজি সরবরাহ শুরু করা যাবে। এতে জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। গ্যাস সংকট কমবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২২ জানুয়ারি সংস্কারের জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে মহেশখালী ছেড়ে যায় সামিটের টার্মিনাল। এরপর সিঙ্গাপুরের সিট্রিয়াম বেনোই ইয়ার্ডে এই টার্মিনালের ড্রাই-ডকিং কাজ শুরু হয়। কাজ শেষে গত ২৬ মার্চ এটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আগামী ১ এপ্রিল এটি পৌঁছানোর কথা।
আরপিজিসিএল’র উপ-মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, সামিটের টার্মিনাল আগামী ১ এপ্রিল দেশে পৌঁছালে ৬-৭ এপ্রিলের মধ্যে অপারেশনাল কাজে যুক্ত হওয়ার কথা। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর দুটি টার্মিনালই চালু হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এক্সিলেন্স টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন ৬০০-৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। সামিটের টার্মিনাল অপারেশনাল কাজে যুক্ত হলে গ্যাস সরবরাহ প্রতিদিন ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট ছাড়িয়ে যাবে। যা গ্রীষ্ম মৌসুমে গ্যাসের তীব্র চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।’
আরপিজিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মো. শাহ আলম জানান, ‘সামিটের এলএনজি টার্মিনালটি ১ এপ্রিলের মধ্যেই মহেশখালী চলে আসছে। আসার পর এলএনজি সরবরাহে যুক্ত হতে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। সেই টার্মিনাল থেকে আগের মতো ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হবে।’
আরএমএন/এমএসএ