গোষ্ঠীস্বার্থকে প্রাধান্য না দিলে অগ্নিঝুঁকি কমানো সম্ভব : আইপিডি
নীতি-পরিকল্পনা প্রণয়নে রাষ্ট্র গোষ্ঠীস্বার্থকে প্রাধান্য না দিলে অগ্নিঝুঁকি কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।
শুক্রবার (২২ মার্চ) অনলাইনে আইপিডি আয়োজিত "গাজীপুরের কালিয়াকৈর, ঢাকার বেইলি রোডসহ নগরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা: নগর পরিকল্পনা ও নীতি কৌশলের দায়" শীর্ষক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিশ্লেষণী অনুষ্ঠানে আলোচকরা এ মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, নগর সংস্থাসমূহের তদারকি, নজরদারি ও সার্বিক সুশাসনের ব্যর্থতা যেমন রয়েছে; পাশাপাশি রয়েছে সার্বিক সমন্বয়হীন নগর ব্যবস্থাপনা। নগর ও প্রশাসনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা, যেমন- উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিস্ফোরক পরিদপ্তর ও পরিষেবা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার গাফিলতিজনিত দায় যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি সঠিক নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাব এবং স্বার্থান্বেষী মহলের ব্যবসায়িক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নীতি-কৌশল প্রণয়নের দায় রয়েছে। সুষ্ঠু নগর পরিকল্পনা, ভবনের টেকসই ডিজাইন, নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা, ভবনের সঠিক ও অনুমোদিত ব্যবহার, ভবনের অগ্নি প্রতিরক্ষা, ফায়ার ড্রিল, ভবন মালিকের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ এবং নগর সংস্থাসমূহের নিয়মিত তদারকি থাকলে নগরে অগ্নিদুর্ঘটনা ও সংশ্লিষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।
অনুষ্ঠানে আইপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়— সিলিন্ডার গ্যাস, জনগণের জীবনের নিরাপত্তা ও ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়েই আবাসিক পর্যায়ে পাইপভিত্তিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে সিলিন্ডারভিত্তিক গ্যাসকে উৎসাহিত করা হয়েছে। যদিও আবাসিক গ্যাস ব্যবহার মোট ব্যবহারের শতকরা ১০ ভাগের মতো। এর ফলে প্রাধান্য পেয়েছে সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের গোষ্ঠী স্বার্থ। পাশাপাশি গ্যাস লাইনের লিকেজ ও অবৈধ গাস লাইনের কারণেও বাড়ছে অগ্নিঝুঁকি। ভবনে নিম্নমানের ইলেকট্রিক সামগ্রীর যথেচ্ছ ব্যবহার এবং আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক গুদাম জীবনের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বাস্তবতায় অগ্নিঝুঁকি কমাতে কার্যকর নগর ও ভবনের পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মনে করে আইপিডি।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে আইপিডির পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, রাষ্ট্রের মনোযোগ বেশি প্রকল্প ও অবকাঠামো নির্মাণে। কিন্তু একটা রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে থাকে সুশাসনের ওপর। যত বেশি সুশাসন থাকবে রাষ্ট্রের মানুষের জীবন তত বেশি নিরাপদ হবে। ভবনের নিরাপত্তা সুশাসনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত,কিন্তু সুশাসনে আগ্রহ ও বিনিয়োগ বাড়েনি। রাষ্ট্রকে মানুষের নিরাপত্তা ও স্বার্থ দেখতে হবে।
এএসএস/এমজে