ছয়-সাত টাকার লেবু ঢাকায় এসে ২০ টাকা হয় কেন?
ছয়-সাত টাকার লেবু ঢাকায় এসে ২০ টাকা হয় কেন- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বাজার তদারকি নিয়ে আপনি কী বলবেন? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চালের বাজার স্বস্তিতে রয়েছে বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে আমি কোনো অস্থিরতা পাইনি। আপনাদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগও পাইনি। তেলের মূল্য ১৭৩ টাকা থেকে ১৬৩ টাকা আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। খোলা বাজারে ১৪৯ টাকায় তেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যাতে সরবরাহ ঠিক থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করছি। বাজারে চিনি, ডালসহ কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো স্বল্পতা কিংবা সংকট নেই। কাজেই এটিকে আমি অবশ্যই স্বস্তি বলবো।
তিনি বলেন, লেবু একটি মৌসুমি পণ্য। কৃষিপণ্যগুলো মৌসুমি হয়। আপনাদের বলেছি, আমাদের কিছু মৌসুমি পণ্য আছে। কৃষি বিপণন অধিদফতর নিয়ে আমি আজও কথা বলেছি। কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে আজও কথা বলেছি, যাতে তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
আহসানুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি কাজ। শুল্ক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমদানি পণ্যের বাজারে বিতরণ নিশ্চিত করা। পণ্য আমদানি কিংবা উৎপাদনও আমাদের কাজ না। দ্বিতীয় হলো, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন যেসব পণ্য এখানে উৎপাদিত হচ্ছে, যেমন তেল, চিনিসহ অন্যান্য জিনিস, সেগুলোর বাজারে সরবরাহ যাতে মসৃণ থাকে।
তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদিত পণ্য কৃষি বিপণন বিভাগ দেখে। আমরা বাজার তদারকি করি। বাজার তদারকি করে আমরা যেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি, অনেকেই আমাদের বাজারে যাওয়াটা লম্ফঝম্প মনে করছেন। কেউ মনে করছেন, নতুন আসছেন শিখতে, শিক্ষানবিশ হিসেবে দেখছেন। আমরা এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিই না, আমরা নিজেদের চেষ্টার বিষয়টি দেখি।
উৎপাদক পর্যায়ে যারা উৎপাদন করছেন, সেখানে পরিবহন ব্যবস্থা আছে। সেই পরিবহন ব্যবস্থা থেকে পাইকারি বাজার আছে। এগুলো আরো ভালো করার সুযোগ আছে। আপনারা বলছেন, লেবুর দামের কথা। আমার এলাকায়ও লেবু হয়, দেলদুয়ারে প্রচুর লেবুর বাজার আছে। সেখানে অনেক জায়গায় কেবল লেবুর ফুল উঠছে। কিছু কিছু উৎপাদন হচ্ছে, বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানে ছয় থেকে সাত টাকায় লেবু বিক্রি হচ্ছে। ছয়-সাত টাকার লেবু, ঢাকায় এসে ২০ টাকা হয় কেন? এটাই ভ্যালু চেইন, সাপ্লাই চেইনে আরো উন্নত করার জায়গা। এটা কি পরিবহনের কারণে বাড়ছে, নাকি আরো কোনো বাধা বিপত্তি আছে? আর কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে। আসার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসেছি, পরিবহনের জায়গাটা যাতে স্বচ্ছ থাকে।
তিনি বলেন, পাইকারি বাজার, খুচরা বাজারে যাচ্ছি। সামাজিক মাধ্যমে ট্রল হচ্ছে, আগে কী সাপ্লাই চেইন ছিল না? আমি কখনোই বলিনি, সাপ্লাই চেইন ছিল না, ভ্যালু চেইন ছিল না। এই ভেল্যু চেইনের উপকরণগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
পাইকারি বাজারে অনেকগুলো মধ্যস্বত্বভোগী আছে বলেও জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যারা পাইকারি বাজারে থাকবেন, তাদের পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স থাকার কথা। সেটা নিয়েও টকশো হচ্ছে, আমি নাকি এখন খুচরা বাজারেও ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে মুদি দোকান চালাতে বলেছি? বলি একটা, সেটা ট্রান্সফার হয়ে যায় আরেকটা।
এসএইচআর/পিএইচ