মাদকের টাকা জোগাড় করতে বৃদ্ধাকে খুন, ২ জনের ফাঁসি
চট্টগ্রামের সদরঘাট এলাকায় মঞ্জু সেন নামে ৭৭ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে খুনের মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ফরহাদ হোসেন জাকির (২২) নামে একজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন আদালত।
রোববার (১০ মার্চ) ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম সিরাজাম মুনিরা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ভোলার দৌলতখান উপজেলার মফিজুল ইসলামের ছেলে মো. রুবেল (২২) ও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার মো. নুরু ছফার ছেলে মো. আব্বাস (২৫)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মঞ্জু সেন নগরের কোতোয়ালি থানার ফিরিঙ্গি বাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৫ মে তিনি মর্নিং ওয়াক করতে বের হন। তিনি ওইদিন হাঁটতে হাঁটতে পার্শ্ববর্তী সদরঘাট থানার নেভাল-২ এলাকায় চলে যান। ওই এলাকায় মাদকের টাকা জোগাড় করতে আসামি রুবেল এবং আব্বাস মিলে আলাপ করছিলেন। হঠাৎ তারা বৃদ্ধাকে হাঁটতে দেখে তার সঙ্গে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা নেন।
পরিকল্পনা মোতাবেক আসামিরা বৃদ্ধাকে টেনেহিঁচড়ে পার্শ্ববর্তী প্যাসিফিক জিন্সের পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে যায়। বৃদ্ধা চিৎকার করলে আসামি রুবেল তাকে গলাটিপে ধরে। এতে বৃদ্ধা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে আসামিরা বৃদ্ধার শরীরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয় এবং মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে পরিত্যক্ত ভবনের পাশে ফেলে দেয়।
চট্টগ্রাম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দীর্ঘতম বড়ুয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধাকে নিখোঁজের ঘটনায় প্রথমে কোতোয়ালি থানায় একটি ডায়েরি করা হয়। এরপর নগরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিংও করা হয়। নিখোঁজের পরদিন সদরঘাট থানা পুলিশ বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে। একই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন বৃদ্ধার ছেলে রতন কান্তি সেন। এরপর তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসামি রুবেল ও আব্বাস ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে মামলাটি তদন্ত শেষে ৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ১০ জন সাক্ষ্য এবং আসামি পক্ষে ৪ জন সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি এবং ৩ মার্চ যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। এরপর আজ (রোববার) রায় ঘোষণা হয়। এতে দুই আসামিকে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২০১ ধারায় ৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আসামি ফরহাদকে খালাস দেওয়া হয়।
এমআর/এমএ