রজনীগন্ধার দুই লস্করের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তদন্ত কমিটির
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৯টি ট্রাকসহ রজনীগন্ধা ফেরি ডুবির ঘটনায় দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে দুই লস্করের বিরুদ্ধে।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা হলেন— রজনীগন্ধায় লস্কর মো. মনির আহম্মাদ এবং অ্যাকটিং লস্কর মো. শাহ জাহান। দুজনকেই এ বিষয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
গতকাল রাতে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এই নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির চিফ পার্সোনেল ম্যানেজার মো. ফজলে রাব্বির সই করা ওই নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১৭ জানুয়ারি ইউটিলিটি ফেরি রজনীগন্ধা পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটের কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনার কারণসহ দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় বের করার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ইনচার্জ মাস্টারের বিধি লঙ্ঘন এবং অন্যান্য স্টাফদের চরম গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণেই ফেরিটি দুর্ঘটনায় পতিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে কমিটির প্রতিবেদনে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, এই জলযানের লস্কর ও অ্যাকটিং লস্কর হিসেবে আপনারা তদন্ত কমিটির সাথে মিথ্যাচার করেছেন। অথচ প্রতিবেদনে আপনাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। দায়িত্বপূর্ণ নাবিক কর্মচারী হিসেবে এমন আচরণ ও কার্যকলাপ চাকরির নিয়ম-শৃঙ্খলার পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই কেন আপনাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এর কারণ লিখিতভাবে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারির ১৬ তারিখ রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিটিতে ৯টি মালবাহী যানবাহন ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মা নদীতে আটকা পড়ে ফেরিটি। পরের দিন সকাল ৮টার দিকে ফেরিটি ৯টি যানবাহন নিয়ে ডুবে যায়। এ সময় ফেরিতে থাকা ট্রাক চালক, সহকারী ও ফেরির স্টাফসহ ২১ জনের মধ্যে ২০ জনকে স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জীবিত উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন
এ ঘটনায় নিখোঁজ হন ফেরির সহকারী ইঞ্জিন চালক হুমায়ুন কবির। ফেরি ডুবির ৬ দিন পর পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার ভাটিতে হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় পদ্মায় ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। হুমায়ুন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে। তিনি পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধার সহকারী ইঞ্জিন চালক ছিলেন।
আরএইচটি/এনএফ