রমজানে ব্রয়লার মুরগি দাম ২৫০-৩০০ টাকা হওয়ার শঙ্কা
আসন্ন রমজান মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম ২৫০-৩০০ টাকা হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। তিনি বলেছেন, গত ১৫ দিনে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়ে ২০০ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, এই মুরগির দাম গতবছরের মতো ২৫০-৩০০ টাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। গত বছর এরকম একটা মিটিংয়ের পরে একদিনে এফবিসিসিআইয়ের হস্তক্ষেপে ভোক্তার অফিসে বসে দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত কমানো হয়। এখানে আপনার মাধ্যমে এবং পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি আছে তার মাধ্যমে জানতে চাই, এবারও ব্রয়লার মুরগী নিয়ে কোনো তেলেসমাতি করা হবে কিনা?
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মতিঝিলে এফবিসিসিআই বোর্ডরুমে আয়োজিত ‘আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন, আমদানি, মজুত, সরবরাহ ও সামগ্রিক দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা’র জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আশঙ্কার কথা বলেন।
ইমরান হাসান বলেন, এরইমধ্যে মসলার বাজার অনেক ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। আপনারা প্লিজ মশলা নিয়ে এবার আর তেলেসমাতি করবেন না। ভোক্তা অধিকার গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও সেই দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে না। আমরা গরুর মাংস পাচ্ছি এখন ৭৫০-৮০০ টাকায়। আমরা বলেছি, গরুর মাংস আমদানি করার ব্যবস্থা করতে। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভুল তথ্যের কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও গরুর মাংস আমরা আমদানি করতে পারছি না। আমি বলতে চাই, রমজানে যদি সত্যি সত্যি মানুষকে স্বস্তি দিতে চান তাহলে গরুর মাংস আমদানির ব্যবস্থা করেন। সারা পৃথিবীতে হিমায়িত হালাল গরুর মাংস বিক্রি করা হয়, আমাদেরও সেই ব্যবস্থা আছে। আমাদের ক্ষেত্রে কিছু মানুষ দুষ্টুমি করে স্বার্থের জন্য মাংস আমদানিটাকে আটকে রেখেছে। তারা এখন গরুর মাংসের ব্যবসায় নেমে গেছে। গাবতলী হাটে চাঁদাবাজি হয়, প্রত্যেকটা হাইওয়েতে চাঁদাবাজি হয়। চামড়ার দাম ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। চামড়া রপ্তানির ব্যবস্থা করে দেন, দেখবেন গরুর মাংসের দাম কমে এসেছে।
তিনি বলেন, চিনি এবং তেলের দাম আস্তে আস্তে বাড়ানো হচ্ছে। আমরা জানি না, রমজানে বর্তমান দামটা স্ট্যাবল থাকবে কিনা। আমাদের রেস্তোরাঁগুলোতে পেঁয়াজ হচ্ছে রান্নার প্রধান উপকরণ। পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আমরা খুব বিপদে আছি। আমরা দেখলাম পেঁয়াজের দাম যখন ২৫০-৩০০ টাকা হয়ে গেল, তখন বিভিন্ন দেশ থেকে তখন পেঁয়াজ আমদানি করা হলো। এখন শুধু আমরা কেন ইন্ডিয়ার ওপর ডিপেন্ড করে বসে আছি, আই ডোন্ট নো। কেন আমরা অন্য দেশকে পছন্দ করছি না। যদি সমস্যা আজকালের মধ্যে শেষ করতে না পারেন, তবে রমজানের আগে পেঁয়াজ নিয়ে আরো একটা সমস্যা হবে।
সভায় দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রমজান মাস ইবাদতের মাস। আপনারা সারা বছর ব্যবসা করেন, রমজান মাসেও ব্যবসা করবেন। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোতে ফেস্টিভ্যালে ছাড় দেওয়া হয়। আমাদের দেশেও তেমন হতে হবে। আপনারা রমজান মাসের ‘ন্যায্য লাভ’ করেন।
অসৎ ব্যবসায়ীর পক্ষে এফবিসিসিআই কথা বলবে না জানিয়ে এফবিআইয়ের সভাপতি বলেন, রমজানে বাজার মনিটরিং চাই না পুলিশ দিয়ে করানো হোক। এটার জন্য বাজার কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনিটরিং করলেই হয়। আপনার এটা না করলে সরকারিভাবে হয়রানির শিকার হতে হবে। এটা আমরা চাই না। অসৎ ব্যবসায়ীর পক্ষে এফবিসিসিআই কোনো কথা বলবে না।
তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পথে চাঁদাবাজির শিকার হলে আমাদের জানাবেন। আমরা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি আলাপ করব।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএন/জেডএস