পরিবেশ সুরক্ষায় ১০০ দিনের পরিকল্পনা গ্রহণ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী ইশতেহারে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ সুরক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং মন্ত্রণালয়ের বর্ণিত চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার নির্ধারণ নিয়ে ১০০ কর্মদিবসের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এসব পরিকল্পনার কথা জানান পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
যা আছে ১০০ কর্মদিবসের কর্মপরিকল্পনায় সেগুলো হলো—
প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি :
• মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার অর্গানোগ্রাম (জনবল কাঠামো) হালনাগাদের উদ্যোগ গ্রহণ।
• পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও এবং সিএসওদের নিয়ে একটি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্কের উদ্যোগ গ্রহণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় বৃদ্ধি করার মাধ্যমে হোল অব গভর্নমেন্ট এবং হোল অব সোসাইটি এপ্রোচ বাস্তবায়ন।
• আসন্ন বাজেটে ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন’ থিম অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রস্তাব প্রেরণ
• কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর পরিবীক্ষণের উদ্যোগ দূষণ নিয়ন্ত্রণ।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উদ্যোগ :
• বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকারি নির্মাণে ১০০% ব্লক ব্যবহারে সংশোধিত রোডম্যাপ অনুমোদন।
• বায়ুদূষণের প্রতিটি উৎস থেকে সৃষ্ট দূষণ মোকাবিলায় ন্যূনতম একটি করে কার্যক্রম গ্রহণ।
• বায়ুদূষণ রোধে দেশব্যাপী ন্যূনতম ৫০০ অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা।
• শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদকরণের উদ্যোগ গ্রহণ।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্যোগ :
• ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ।
• প্লাস্টিক দূষণ হতে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের তালিকা প্রণয়ন এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করা।
একইসঙ্গে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার হ্রাসে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।
• পণ্য প্রস্তুতকারক ও আমদানিকারকদের পণ্য হতে সৃষ্ট বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এক্সটেন্ডেড প্রোডিউসার রেসপনসেবলিটির খসড়া চূড়ান্তকরণ।
• শিল্প কারখানার ইটিপি কার্যকরভাবে চালু রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইন মনিটরিং চালুর উদ্যোগ গ্রহণ।
• সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ফ্রি ঘোষণার উদ্যোগ গ্রহণ। অন্যান্য সরকারি অফিসসমূহ একই ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা জারিকরণ।
• পাইলটিং: পরিবেশদূষণ রোধে প্রতি বিভাগে দু'টি করে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ফ্রি স্কুল ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন।
উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রতি বিভাগে দুটি করে জিরো ওয়েস্ট ভিলেজ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ।
পরিবেশ, বন, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে উদ্যোগ :
• স্কুল-কলেজের সিলেবাস/পাঠ্যবইকে সবুজায়নের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ।
• দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পাহাড়, টিলা ও প্রাকৃতিক জলাধারের ম্যাপিংয়ের উদ্যোগ গ্রহণ।
• পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ। সবুজ ক্যাটাগরিভুক্ত ছাড়পত্র ‘সেলফ অ্যাসেসমেন্ট’র আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ।
• শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ও সৃষ্ট সম্ভাব্য দূষণের পরিধি, মাত্রা এবং পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্যাটাগরি হালনাগাদকরণের উদ্যোগ গ্রহণ।
• জবরদখলকৃত ৫০ হাজার একর বনভূমির উচ্ছেদ প্রস্তাব প্রস্তুতকরণ এবং জেলা প্রশাসনের নিকট প্রেরণ। ইতোপূর্বে প্রেরিত ১ লক্ষ ৮৭ হাজার একর জবরদখলকৃত বনভূমি উদ্ধারের প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ।
• পরিবেশ দূষণকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের পুনর্নির্ধারিত হার/পরিমাণ বাস্তবায়ন।
• পরিবেশ, বন, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় উচ্চ আদালতের রায় যথাযথ বাস্তবায়নে পরিবীক্ষণ সুসংহত করা।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্যোগ :
• অর্থবহ ও কার্যকর সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবেশ ও জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভলপমেন্ট পার্টনারশিপ চূড়ান্তকরণের কার্যক্রম গ্রহণ৷
• ইউএনএফসিসিসির উদ্যোগে এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক আগামী এপ্রিল ২০২৪-এ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ন্যাশনাল এডাপ্টেশন প্লান এক্সপো আয়োজনের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ
• মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্লান ২০২২-২০৪১ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মকৌশল প্রণয়ন
• জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় প্রস্তাবিত প্রস্তাবসমূহ যাচাই বাছাইয়ের নিমিত্ত গাইডলাইন প্রণয়ন৷ ৫। আন্তর্জাতিক লস এন্ড ড্যামেজ হতে অর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ।
এমএম/এমএ