চিকিৎসক হয়রানি : উদ্বেগ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিএমএর চিঠি
সরকারি বিধিনিষেধে মুভমেন্ট পাসের জন্য চিকিৎসকদের ক্রমাগত হয়রানিতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজের উৎসাহ হারাবেন বলে মনে করছে চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে এই আশঙ্কা জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশে চলমান লকডাউনকালে করোনা মোকাবিলায় সম্মুখসারির যোদ্ধা চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মস্থলে যাতায়াতকালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হয়রানি ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের ঘটনা ঘটায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কগ্রস্ত ও হতাশ হয়ে পড়ছেন।
এতে বলা হয়েছে, গতকাল (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনির গাড়ি আটকিয়ে পরিচয় জানতে চাওয়ার নামে একজন নারী চিকিৎসককে যেভাবে হেনস্থা করা হয়েছে তার খবর ও আংশিক ভিডিও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন : আমি বীর বিক্রমের মেয়ে, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
নিজ গাড়িতে কর্মরত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের স্টিকার লাগানো এবং নিজের নামাঙ্কিত চিকিৎসক গাউন পরিহিত অবস্থায় নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে আক্রমণাত্মকভাবে জেরা করে উত্যক্ত ও হেনস্থা করার খবর দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। চিকিৎসকের এতগুলো পরিচয় দেওয়ার পরেও কেবলমাত্র মুভমেন্ট পাস ও প্রাতিষ্ঠানিক আইডি কার্ডের নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এহেন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
আইডি কার্ড প্রসঙ্গে বলা হয়, সচিবালয় কিংবা পুলিশ কিংবা সাংবাদিক লেখা স্টিকারযুক্ত কোন গাড়ি কোথাও আটকানো হয়েছে বা থামানো হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত নজির নাই। অধিকন্তু বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ চিকিৎসকই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সঙ্গে জড়িত। তারা সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন না। ফলে তাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক আইডি কার্ডও নেই।
চিঠিতে বলা হয়, ক্রমাগত এ ধরনের ঘটনা সংগঠিত হওয়ার কারণে বিষয়টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মহোদয়কে অবহিত করার পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলে এবং রাস্তায় ক্রমাগত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হয়রানি ও নাজেহাল করতে থাকলে নানা ধরনের মানসিক চাপে বিপর্যস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থকর্মীরা তাদের কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন এবং যার প্রভাব বর্তমান নাজুক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পড়তে বাধ্য।
অনুগ্রহপূর্বক গতকালের ঘটনায় দ্রুত তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে বিএমএ।
টিআই/আরএইচ