পঁচাত্তরের পরে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা বসেছে... ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে কিছু দল সৃষ্টি করে, আর কিছু এলিট শ্রেণি তৈরি করে, এর ওপর নির্ভর করে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করে। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী... যদিও ৭৫ এর পরে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করে। বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করানো হয়। তারা মুক্তি পেয়ে দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে আমাকে দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। আমি ফিরে আসি এমন একটি দেশে, যেখানে আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের বিচার করবে না বলে ইনডেমনিটি জারি করা হয়েছিল। তাদেরকে (বঙ্গবন্ধুর খুনি) বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের যেসব দোসর আল বদর এবং রাজাকারের সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে লুটপাট করেছিল, আমাদের দেশে মা-বোনদেরকে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতর তুলে দিয়েছিল, ক্যাম্পে নিয়ে মাসের পর মাস নির্যাতন করেছিল, সেসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছিলেন জাতির পিতা।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, একদিকে খুনি, আরেকদিকে যুদ্ধাপরাধী, তারাই ক্ষমতায়...। সেই অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যয় নিয়ে ফিরে আসি। তখন দারিদ্র্যে জর্জরিত এ দেশের মানুষ... দুর্ভিক্ষও লেগেছিল। জাতির পিতার যে আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন এ দেশের মানুষকে নিয়ে, সেটিও তখন পূরণ হয়নি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এ দেশে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, কী কী কাজ করা দরকার... একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশকে কীভাবে তিনি (বঙ্গবন্ধু) গড়ে তুলবেন, সেই ভাষণ তিনি এই জায়গায় দিয়েছিলেন। এই ভাষণ যখন শুনি... আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। দীর্ঘ নয় মাস কারাগারে বন্দি, সেই জেল, যেখানে শীতের সময় বরফ, গরমের সময় গরম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কীভাবে রেখেছিল তারা, সঠিকভাবে খাবারও দিত না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন, কোনো কিছুই ছিল না। তার বিরুদ্ধে মামলা এবং ফাঁসির হুকুম..., সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে, লন্ডন থেকে বাংলাদেশের মাটিতে যখন নামেন... তিনি ছুটে এসেছিলেন বাংলার জনগণের সামনে।
সরকারপ্রধান বলেন, ১০ জানুয়ারি এখানেই তিনি ভাষণ দেন। সেই ভাষনে একটি দেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন, সব পরিকল্পনা, দুঃখী মানুষের হাসি ফোটানোর চিন্তা ও পরিকল্পনা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ, সেটিই তিনি তুলে ধরেছিলেন।
এমএসআই/কেএ