বাঁচার আকুতি, ট্রেনের জানালায় আটকে ভস্মীভূত যাত্রী
ট্রেনে আগুন লাগার সময় জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। হাত বাড়িয়েছিলেন সাহায্যের জন্য, বের হতে পারেননি। তার অর্ধেক শরীর ট্রেনের জানালার বাইরের, অর্ধেকটা ভেতরে। শত শত মানুষের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হলেন যাত্রী।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে লাগা আগুনের সময় ঘটেছে। ট্রেনের ওই যাত্রী মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। তবে তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, ওই ব্যক্তিকে জানালা থেকে টেনে বের করার চেষ্টা করেছেন অনেকে। তাকে উদ্ধার করতে যাওয়া একজন তার শরীরে স্পর্শ করতে গিয়ে হাত গরমে পুড়ে যায়। এরপর অনেকে বাঁশ দিয়ে তাকে বের করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সবার সামনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে তার।
এর আগে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এতে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিতে গেছেন একজন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রাত ৯টার দিকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছে। সঙ্গে আছে বিজিবি।
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। অবশেষে ৭টি ইউনিটের চেষ্টা রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ট্রেনটির ‘চ’ বগির একটি সিটে প্রথমে আগুন লাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন যাত্রীরা। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়লে যাত্রীরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় নিচে নেমে আসেন। তবে এ সময় অনেক যাত্রী ভেতর থেকে বের হতে পারেননি বলে শঙ্কা রয়েছে।
এআর/এমএসএ