বাঁশখালিতে শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলি রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড
চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেতনসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে গুলি চালিয়ে পাঁচ শ্রমিক হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। মেহনতি শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলি রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের শামিল বলছে সংগঠনটি।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
শ্রমিক নেতারা বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা যাদের ওপর ঘুরে সেই শ্রমিকরা আজ নির্মম নির্যাতনের শিকার। সরকার ঘোষিত এই কঠিন লকডাউনের সময় শ্রমিকের ঘরে দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি শ্রমিকের স্বাভাবিক জীবনের দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত ছিল। বাঁশখালিতে যে ঘটনা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ঘটিয়েছে তা ইতিহাসের নতুন শিকাগো বলে পরিচিতি পাবে।
তারা বলেন, যেসব শ্রমিকরা শুক্রবার জুমার নামাজে অংশ নিয়েছিল তাদের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় ধর্মপ্রাণ শ্রমিকরা ইফতার ও নামাজের সুযোগ দেওয়া, বকেয়া বেতন পরিশোধ, যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের পুনর্বহাল, রমজানে কর্মঘণ্টা কমানোসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন করে তাদের কাজে ফিরিয়ে আনা ছিল যৌক্তিক সমাধান। কিন্তু তা না করে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন স্তিমিত করতে গিয়ে আজকের এই ঘটনা সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম ইতোমধ্যে পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। এখনো বহু শ্রমিক হাসপাতালে মৃত্যর মুখোমুখি। আমরা জানি না এই মৃত্যর মিছিল কোথায় গিয়ে শেষ হবে। আজকের এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অবিলম্বের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তারা বলেন, যেসব অতি উৎসাহী পুলিশ নিরীহ শ্রমিকদের ওপর গুলিয়ে চালিয়েছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসাসহ সার্বিক দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। অনতিবিলম্বে শ্রমিকদের সকল ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে সারাদেশের শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে এই অন্যায় হত্যাকাণ্ডের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
এসআই/ওএফ