বকশি বাজার জামে মসজিদ শিগগিরই মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে
দ্রুত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে বকশি বাজার জামে মসজিদ মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) বকশি বাজার জামে মসজিদের নতুন নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ তাপস বলেন, মসজিদ কমিটি, ইমাম সাহেব ও খতিবসহ ওনারা নকশা দেখে দিয়েছেন। ওনারা নকশা পছন্দ করার পরেই আমরা বাকি (মসজিদ নির্মাণ) কাজ আরম্ভ করেছি। ওনাদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা এটার আটতলা পর্যন্ত ভিত্তি করেছি। এ রকম একটি মসজিদ নির্মাণ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। আমরা ঠিকাদার নিয়োগ করেছি।
তিনি বলেন, আজকে থেকে শুরু করে আগামী ২০২৫ সালের নভেম্বরের মধ্যেই পাঁচতলার পুরোটা নির্মাণ করে উন্মুক্ত করে দিতে পারি, সেভাবেই আমরা ঠিকাদারকে নির্দেশনা দিয়েছি। দোয়া করবেন, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা এই কাজ সম্পন্ন করতে পারি। প্রাথমিকভাবে আমরা পাঁচতলা পর্যন্ত (নির্মাণ) করছি। কারণ, আমরা দ্রুত মসজিদটি নির্মাণ করে মুসল্লিদের জন্য সম্পূর্ণভাবে খুলে দিতে চাই। যদিও নিচতলার কাজ সম্পন্ন করার পরপরই আমরা মুসল্লিদের জন্য খুলে দিতে পারব ইনশাআল্লাহ। পর্যায়ক্রমে আমরা দোতলা থেকে ৫-তলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করব।
তিনি আরও বলেন, এই মসজিদটি নির্মাণ করতে গিয়ে আমরা বারবার খতিয়ে দেখেছি। যখন আমরা চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হয়েছি, এই জায়গাটি যিনি ওয়াকফ করেছেন তিনি পুরো জমিটাতেই মসজিদ চেয়েছেন। সেভাবেই তিনি ওয়াকফ করেছেন, দান করেছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে সরে গিয়ে রাস্তার ওপরে (মসজিদ) করে রাস্তাটাও সংকীর্ণ করা হয়েছে। জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। আর মসজিদের জায়গা থেকেও মসজিদকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা প্রত্যেকটি কাজ করার আগে পুরোটা খতিয়া দেখি। আমরা নেক নিয়তে চেষ্টা করি যেন কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ভালো কাজ করতে গিয়েও আমাদের হাত দিয়ে যেন কোনো অন্যায় না হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, দুটি দাবি এসেছে। একটি হলো (জেলখানা রোড) প্রশস্ত করার। আমাদের কাউন্সিলর সেটি লিখিতভাবে পেশ করবে। তারপর সেটি চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ করে, পর্যালোচনা করে আমরা বাকী উদ্যোগ গ্রহণ করব। আর বাকি দাবি হলো, যারা এখানে ছিলেন তাদের পুনর্বাসন। যারা এখানে দখলে ছিলেন তাদের কারো প্রতি আমাদের কোনো বিদ্বেষ বা রাগ নেই। আমরা যে নিয়ত নিয়ে কাজ করেছি, সেই নিয়ত আল্লাহ রব্বুল আলামিন কবুল করেছেন। যদিও বা তাদের এখানে কোনো অধিকার নেই, দাবি নেই। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের জন্য যা প্রয়োজন হবে, আমরা তা করে দেব।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ব্যারিস্টার তাপস অত্যন্ত সৎ, ডায়নামিক ও নিষ্ঠাবান। তিনি যে কাজে হাত দেন সে কাজ থেকে কখনো পিছপা হন না। তা সম্পন্ন করেন। তিনি এখানে রাস্তা সম্প্রসারণের পাশাপাশি সুন্দর একটি মসজিদ করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। সেজন্য আমি ঢাকাবাসীর পক্ষ হতে তাকে ধন্যবাদ জানাই।
উল্লেখ, আটতলা ভিত্তিতলে পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন নির্মাণ হতে যাওয়া এই মসজিদে একসঙ্গে এক হাজার ৭৯ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। একসঙ্গে ৩৮ জন মুসল্লির ওযু করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ৯.৪৮ শতক জায়গার উপর নির্মিত এই মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে ৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নেই এই মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের ২২ নভেম্বর মসজিদ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে মেয়র ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডগাইর খাল হতে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরে তিনি দোয়েল চত্বর সংলগ্ন ঢাকা ফটকের সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওমর বিন আব্দাল আজিজ, চকবাজার শাহী জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মিনহাজ উদ্দিন, জাতীয় ইমাম সমাজের সভাপতি আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক আজহারি ও করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান।
এএসএস/কেএ