নির্বাচন পরবর্তী জ্বালানি সাপ্লাই চেইন নিয়ে সতর্ক সরকার
নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের দিকে সরকারের নজর রয়েছে মন্তব্য করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রভাব যেন জ্বালানির সাপ্লাই চেইনে না পড়ে সে প্রস্তুতি রয়েছে।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ডিআরইউ সদস্য ও পরিবারের জন্য হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নজরুল হামিদ বলেন, নির্বাচন পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি আছে। আমাদের খেয়াল আছে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট জ্বালাও-পোড়াও করে সারা বাংলাদেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। যার ফলে জ্বালানিতে ব্যাপকভাবে সাপ্লাই চেইনের ব্যাঘাত হয়েছিলো। এবার সে ধরনের নাশকতা এড়াতে একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। এ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত জোট বড় ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে পারে, যেটা আমরা আঁচ করছি। এটার জন্য আমাদের জ্বালানি কৃষকের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা আমরা সম্মিলিতভাবে করেছি। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা মনে করি আমরা ভালোমতো সাপ্লাই করতে পারব, যদি বড় কোনো অঘটন না হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী মার্চের পর হিট ওয়েদার আসা শুরু হবে। ওই সময়ে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক রাখতে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। বিশেষ করে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে সেচ ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি ব্যাপকভাবে নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এ বছর বিদ্যুতের যে চাহিদা ছিল, তার থেকে প্রায় ৮ গুণ বেড়ে যাবে আগামী বছরে। সেটার জন্য আমরা পরিকল্পিত একটা ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না। আগামীতেও ভালো অবস্থানেই যাব। আমাদের ট্রান্সমিশন লাইনও ভালো অবস্থানে আসবে। সাবস্টেশন ভালো অবস্থানে আছে। গ্যাসের অবস্থানও ভালো অবস্থানে আছে। জ্বালানির ব্যাপারে একটা ভালো অবস্থানে যাব, আশা করছি।
তিনি বলেন, সেচে আমাদের প্রায় ১২ লাখ ডিজেল পাম্প আছে। এগুলোতে সময় মতো তেল পৌঁছাতে হবে। এ তেলের জোগান দিতে হবে। এখানে কিছুটা সমস্যা ছিল, গত কয়েক মাস জ্বালানির ক্ষেত্রে। বিশেষ করে জেড ফুয়েল থেকে আরম্ভ করে বিশেষ কিছু অসুবিধা ছিল। এটা আমরা সমাধান করে ফেলেছি। আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছি।
আলোচনা রয়েছে- ডলার সংকটে জ্বালানি কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভেঙে পড়বে না, তবে কিছুটা সংকট তো আছে। কিছুটা সংকট আছে সেটা আমরা ম্যানেজ করছি।
আমরা আশা করছি, আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে ভালো অবস্থানে চলে যাবে। তবে এখনো সংকট কাটেনি। আমি মনে করি, পরিস্থিতি ওরকম খারাপের দিকে যায়নি। আমাদের হাতে আছে।
আরও পড়ুন
সিলেটে আরও তেলের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আরও দুটি ডিল করতে যাচ্ছি সিলেটে। আরও ৫-৬ মাস দেখব। তেলের পরিমাণ কেমন পাওয়া যাবে, তার পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।
বিবিআনা গ্যাস ফিল্ডে গ্যাসের উৎপাদন কমে যাওয়ার বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে মনে হয় সম্ভাবনা খুবই ভালো। আমাদের রেজাল্ট যে আসছে বিশেষ করে টুডি, থ্রিডি সার্ভের। ২০২৬-২৭ পরবর্তীকালে আমরা আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারবো। হয় তো ২০২৪, ২০২৫ এবং ২০২৬ এর মধ্যে একটা ডিক্লাইন অবস্থায় থাকবে বিবিআনা, কিন্তু ২০২৭-এর আবার সেটা রিকভার করবে। সুতরাং আমি মনে করি এটা একটা বড় আশার বাণী।
ডিআরইউ সভাপতি শুকুর আলী শুভর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সেক্রেটারি মহিউদ্দিন, ক্রিয়া সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাঈদ শিপনসহ অন্যান্যরা।
এনএম/পিএইচ