বিয়ের কথা বলায় প্রেমিকাকে হত্যা
আশুলিয়ার শিমুলিয়া এলাকার বংশাই নদীতে ভাসমান অজ্ঞাতনামা নারীর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে র্যাব। মরদেহ উদ্ধারের পর প্রযুক্তির মাধ্যমে মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে র্যাব। সোমবার রাতে আশুলিয়ার টেংগুরী এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪।
গ্রেপ্তাররা হল- এনামুল সানা (২৭) ও সোহাগ রানা (২৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন করেছেন।
র্যাব জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে এনামুল ও রুবিনার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। রুবিনা বিয়ের কথা বললে এনামুল অস্বীকৃতি জানায় এবং রাগান্বিত হয়ে পড়লে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে রুবিনার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের বিক্রমপুর এলাকায় বংশাই নদীতে একটি অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন নৌ-পুলিশ ও র্যাবকে অবহিত করে। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অজ্ঞাত ওই নারীর মরদেহটির পরিচয় শনাক্ত করে। নিহত রুবিনা দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার রঘুনাথপুর দোলাপাড়া গ্রামের আব্দুল ওয়ারেছের মেয়ে।
আরও পড়ুন
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায়, নিহত রুবিনা খাতুন নরসিংদীর পলাশ এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। গত ৬ মাস আগে এনামুলের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুবিনার পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এনামুল পরিবারসহ আশুলিয়া ভাড়া বাসায় বসবাস করতো এবং আগে গার্মেন্টসে সুপারভাইজারের চাকরি করতো। বর্তমানে সে ভাড়ায় নিজের মোটরসাইকেল চালায়। এনামুল প্রায়ই রুবিনাকে অধিক বেতনে অন্যত্র চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আশুলিয়ায় আসতে বলতো।
তিনি আরও বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর এনামুলের স্ত্রী ও সন্তান গ্রামের বাড়ি খুলনার পাইকগাছায় চলে যায়। এনামুল রুবিনাকে সুযোগ বুঝে তার আশুলিয়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে এবং মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার বাসায় রাখে। বাসায় অবস্থানকালীন সময় রুবিনা এনামুলকে বিয়ের কথা বললে এনামুল বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়।
র্যাব জানায়, এসময় বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে এনামুল ক্ষিপ্ত হয়ে রুবিনার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তার বিরুদ্ধে খুলনার পাইকগাছা থানায় শিশু অপহরণ, চুরি ও মারামারি সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।
এমএসি/পিএইচ