‘জরুরি’ ওড়না ডেলিভারি, গুনতে হলো হাজার টাকা জরিমানা
সরকারের সর্বাত্মক বিধিনিষেধের মধ্যে মেয়েদের ওড়না ‘জরুরি ভিত্তিতে’ ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিলেন আওলাদ নামে এক অনলাইন পেইজের মালিক। র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞেস করলেন, আপনার এ কাজটি কি জরুরি? আওলাদ উত্তর দিলেন, 'আমি তো জরুরি জানতাম।' উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় ১০০০ টাকা জরিমানা করা হয় তাকে।
ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ এলাকার। সাত দিনের বিধিনিষেধে মানুষের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে সেখানে অভিযান চালাচ্ছিলেন র্যাবের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
অভিযানে মোটরসাইকেলটি দেখে থামানোর নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। মোটরসাইকেলের পেছনে বাঁধা ছিল একটি কালো ব্যাগ। ব্যাগ সম্পর্কে ম্যাজিস্ট্রেট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এতে মেয়েদের ওড়না আছে। আমি নিউ মার্কেট এলাকায় যাব ডেলিভারির জন্য।’
অর্থদণ্ড পাওয়া আওলাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, 'আমি অনলাইন ডেলিভারিকে জরুরি সেবা হিসেবেই জানতাম। তাই বের হয়েছিলাম।'
সকাল থেকে পরিচালিত অভিযানে মোট ১১ জনকে ৬২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সড়কে চলাচলকারী অধিকাংশ লোকজনই ম্যাজিস্ট্রেটকে 'হাসপাতালে যাব'- এমন কারণ দেখাচ্ছেন।
অভিযানের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ১৮টি নির্দেশনা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কঠোর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে অভিযান চালাচ্ছি। অনেকেই সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে 'কম প্রয়োজনে' বাইরে বের হচ্ছেন। তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। তবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য জরিমানা নয়, আমরা সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতেই অভিযান চালাচ্ছি।
এদিকে করোনার সংক্রমণ রুখতে সরকার দেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। ১৪ এপ্রিল থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে। এর আগে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের জন্য গণপরিবহন বন্ধসহ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে ১১ দফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। দুদিন পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। এর একদিন পর খুলে দেওয়া হয় শপিংমলও। এতে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে সমালোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।
এরই মধ্যে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়তে থাকে। প্রতিদিন মৃত্যু ও সংক্রমণের নতুন রেকর্ড হচ্ছে দেশে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘প্রয়োজনে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার’।
এরপর গত ৯ এপ্রিল সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর ও সর্বাত্মক লকডাউন’ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন। পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীও একই ইঙ্গিত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ এপ্রিল ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।
এআর/এসএম/জেএস