‘মৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও রায় দেওয়া হচ্ছে’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, এদেশে গণতন্ত্র নেই, ভোটাধিকার নেই, আইনের শাসন নেই। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমার সাংবিধানিক অধিকার এবং ভোটাধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের এসরকার নির্বিচারে কারাগারে নিচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে রায় দিচ্ছে। এমনকি মৃত এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও রায় দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (০৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি (একাংশ) বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজী বলেন, আমরা আজকে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে এখানে একত্রিত হয়েছি। আমরা দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছি। কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। এই সরকার একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এভাবে প্রহসনের নির্বাচন করে শেখ হাসিনার সরকার দেশের মাটিতে থাকতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাবো। দেশের মানুষের জন্য ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। যতদিন পর্যন্ত বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দেবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাবো।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, এমন একটি প্রহসনমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে যার সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট যুগে যুগে অনেক এসেছে। যে ধরনের নির্বাচনী ব্যবস্থা আপনি (প্রধানমন্ত্রী) করেছেন; স্বতন্ত্র দিচ্ছেন, ডামি দিচ্ছেন, এখন আবার আপনার সঙ্গে সবাইকে নৌকায় উঠানোর পাঁয়তারা করছেন। আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আপনি পৃথিবীর গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছেন। অসম্ভব একটা কাজ করেছেন। আগামীতে যদি গণতন্ত্রের জন্য কাউকে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয় আমি প্রস্তাব করছি শেখ হাসিনাকে এক নম্বরে রাখবেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, এই সরকার ভয়ের রাজত্ব কায়েম করে বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে একটি একতরফার নির্বাচন করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই দিবাস্বপ্ন কখনো সফল হবে না। গুম-খুন, টিয়ার গ্যাস উপেক্ষা করে পেশাজীবীসহ দেশের মানুষ আবারও রাস্তায় নেমে এসেছে। সরকার একতরফা নির্বাচন থেকে সরে আসবে, মানুষ এটাই প্রত্যাশা করে। তা না হলে কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়, সেটি দেশের মানুষ ১৯৭১, ১৯৯০ সালে দেখিয়েছে। প্রয়োজন হলে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আপনাদের (সরকার) ক্ষমতার মসনদ থেকে জনগণ টেনে নামাবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে।
বিএসপিপির সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে পেশাজীবীরা রাস্তায় নেমেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছেড়ে যাবে না।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মাহবুব আহমেদ খোকন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হারুন আল রশিদ, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. দাবিরুল ইসলাম প্রমুখ।
ওএফএ/এসএম