যাতায়াতের কষ্ট আর স্মরণ করতে চান না বাণিজ্যিক এলাকার কর্মজীবীরা
মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর রুট বিস্তীর্ণ হয়েছে বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল পর্যন্ত। ফলে অনায়াসেই মাত্র ৩২ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিলে পৌঁছা যাচ্ছে বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির যানবাহন ব্যবস্থা মেট্রোরেলের মাধ্যমে। যদিও পুরো নগরবাসী এই সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না। তবে যারা এই সুবিধা পাচ্ছেন, তারা আর সড়কে যাতায়াতের কষ্ট স্মরণ করতে চান না।
গত শনিবার (৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করেন। এর আগে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা-আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করেন তিনি। এর ফলে ঢাকা সিটির মতো যানজটের শহরে ২০.১ কিলোমিটার পথ উড়াল সড়কে পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩২ মিনিটে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সকালে মেট্রোরেলের মতিঝিল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ১০ মিনিট পরপর একটি করে ট্রেন এসে স্টেশনে থামছে। এক ট্রেনে এত পরিমাণ যাত্রী আসছেন যে, তারা চেক আউট করতে করতে অন্য আরেকটি ট্রেন প্লাটফর্মে চলে আসছে। সবমিলিয়ে মতিঝিলমুখী যাত্রীদের বিশাল চাপ লক্ষ্য করা গেছে স্টেশনে।
তবে মতিঝিল থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার জন্য তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি। অন্যদিকে, বাণিজ্যিক এলাকার কর্মজীবীরা আবার ফিরতি পথে এই মেট্রোরেলকেই যানবাহন হিসেবে সঙ্গে চান।
আরও পড়ুন
জনতা ব্যাংকের কর্মী মনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাত্র ২০ মিনিটে মিরপুর-১০ নম্বর থেকে মতিঝিলে এসেছি। আগে আমাকে সকাল সাড়ে ৭টায় ঘুম থেকে উঠতে হতো। এরপরেও এখানে পৌঁছাতে প্রায় ১০টা বেজে যেত। গতকাল (রোববার) থেকে সকাল বেলা নিজের জন্য কিছুটা সময় পেয়েছি। কিছুটা সময় পরিবার কেউ দিতে পারব।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তা সোনিয়া খন্দকার জুই ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাসা কল্যাণপুরে। সেখান থেকে মতিঝিলে আসতে আমাকে অন্তত পৌনে ৮টায় বাসে উঠতে হতো। মতিঝিল পৌঁছাতে কখনো ১০টা বা সোয়া ১০টা বেজে যেত। আমি আজ ৯টায় বাসা থেকে বের হয়েছি এবং আপনার সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছি সকাল সাড়ে ৯টায়। কল্যাণপুরের বাসা থেকে বের হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত আসতে আমার মাত্র ৩০ মিনিট সময় লেগেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সময় বাঁচানোর জন্য এবং যুগোপযোগী একটি পরিবহন ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা।
মেহেদি হাসান সিদ্দিকী নামে একজন বলেন, বিকেল ৫টার পর ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১২ নম্বরের বাসে ওঠা রীতিমতো একটা এভারেস্ট জয়ের সমান। প্রতিযোগিতা করে বাসে উঠতে হয় আর জ্যাম তো সঙ্গে আছেই। আপনি যদি প্রতিযোগিতা করে বাসে উঠতে না পারেন তাহলে আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। নয়তো সিএনজি কিংবা হেঁটে রওনা দিতে হবে। মহিলা হলে কোনো কোনো বাসের কন্ট্রাকটর নেয়ই না, আবার স্কুলের ড্রেস পরা ছেলেমেয়েদের দেখলেও অনেক বাস থামে না। আগে কেউ ভেবেছিল যে উত্তরা থেকে মাত্র ৩২ মিনিটে মতিঝিল আসা যাবে। মেট্রোরেল একটা আরামদায়ক জার্নির নাম।
এমএইচএন/এসএসএইচ