‘আমাদের গাড়িগুলোর দিকে তাকালে মনে হয় গরিব গরিব চেহারা’
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠলে ঢাকা শহরকে ইউরোপের মতো লাগে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আর আমাদের গাড়িগুলোর দিকে যখন তাকাই, মনে হয় গরিব গরিব চেহারা। এটা তো বাংলাদেশ না। উপর থেকে মনে হয় ইউরোপ আর নামলে এ কোন বাংলাদেশ। ঢাকা শহরে মুড়ির টিনগুলো (বাস) চলছে। আল্লাহর নামে চলিলাম। গাড়ির গায়ে লেখা আল্লাহর নামে চলিলাম। আর যেতে যেতে খাদের মধ্যে অথবা পাশের আইল্যান্ডের উপর চলে যায়। এই হইলো অবস্থা।’
রোববার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আয়োজিত জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মালিক সমিতির নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের আজ যে হাইট সেই হাইটের সঙ্গে এটি মানায় না। আমাদের গ্রামগুলোতে ঢাকা শহরের চেয়ে ভালো বাস চলে। তাহলে ঢাকা সিটিতে কেন চলবে না। আপনারা বন্ধ না করলে আমি কি এগুলো বন্ধ করতে পারব। অসুস্থতার পর আমি ভিজিট করতে পারিনি। কিন্তু অসুস্থতার আগে আমি রাত বারোটা পর্যন্ত ভিজিট করেছি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে কাজ করেছি। একদম পারফেক্ট মানুষ পৃথিবীতে কেউ নাই। আমি পারফেক্ট মানুষ, এই দাবি আমি করবো না। ভুলত্রুটি আমারও হতে পারে। তবে ভালো করতে চেষ্টা করেছি। দুর্নীতি কমাতে চেষ্টা করেছি, টেন্ডার বাণিজ্য, প্রমোশন বাণিজ্য, ট্রান্সফার বাণিজ্য বেশিরভাগই বন্ধ করতে পেরেছি। আমার মনে হয় আপনারা সহযোগিতা করলে ভবিষ্যতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিলে অনেক কিছুই করা সম্ভব হবে।
দেশের বাস্তবতা ভিন্ন জানিয়ে তিনি বলেন, নসিমন-করিমন থ্রি হুইলার এসব ছোট-ছোট যানগুলো যেখানে ৬ লেন, ৮ লেন আছে সেখানে এমপ্লয়মেন্ট করতে পারছি। ঢাকা চট্টগ্রাম রোডের ডিজাইন আমি আসার আগেই হয়েছে। সেখানে ৬ লেনের বিষয়টা চিন্তা করা উচিৎ ছিল। এখন এসে আমরা সেটার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
গাড়ি চালকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন ড্রাইভারকে কক্সবাজার পাঠাচ্ছেন। আবার ওইদিন তাকে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনছেন, আবার পাঠাচ্ছেন। ড্রাইভাররা তো মানুষ। এত পরিশ্রম করলে তো তার ঝিমুনি আসবেই। তার ঘুম আসবে, ক্লান্তি আসবে। বিশ্রামাগার আমাদের আরও আগে করা উচিৎ ছিল। এটা আমরা অনেক পরে এসে করছি।
এ সময় ১২টি বিশ্রামাগারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। তখন মন্ত্রী বলেন, শেষ হয়ে কি লাভ। সেগুলো সুফল যদি স্টেকহোল্ডাররা না পায়, তাহলে শেষ হয়ে কি লাভ।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রওশন আরা মান্নান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শাহাবুদ্দিন খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা, মহাসচিব এনায়েত উল্যাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)- এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
এমএইচএন/এমএসএ