‘সিন্ডিকেটের পেছনে মন্ত্রীর হাত’ বক্তব্য দেওয়ার ২৪ দিন পর অপসারণ
‘জনস্বার্থে’ হঠাৎ জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করেছে সরকার।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ জনস্বার্থে বাতিল করা হলো।
বিষয়টি স্বীকার করে ড. মঞ্জুর আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সন্ধ্যায় সরকার আমার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে চিঠি দিয়েছে।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের আগে তিন মাসের নোটিশ দিতে হয়। এক্ষেত্রে এটা মানা হয়নি বলেও জানান তিনি।
নারী মন্ত্রীকে নিয়ে বক্তব্যের জেরে কি আপনি চাকরি হারিয়েছেন? এমন প্রশ্নে সাবেক এই সচিব বলেন, আমার জায়গায় থেকে এ বিষয়ে কথা বলা উচিত নয়। এটা আপনারা (সাংবাদিক) বলতে পারেন।
‘মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের পেছনে একজন নারী মন্ত্রীর হাত রয়েছে’ এমন বক্তব্য দেওয়ার ২৪ দিন পর তাকে পদ থেকে অপসারণ করা হলো।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নদী দখলদারদের পেছনে রাজনৈতিক শক্তি আছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে যারা বালি উত্তোলন করছেন, তাদের সঙ্গে চাঁদপুরের একজন নারী মন্ত্রীর সম্পর্ক আছে।
জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, হায়েনারা দল বেঁধে মেঘনায় হামলে পড়েছে। মেঘনা থেকে আবার বালু তোলার চেষ্টা চলছে। এখানে শত শত ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হবে। এতে নদীর ক্ষতি হবে, মাছের ক্ষতি হবে, পরিবেশের ক্ষতি হবে। এদের থেকে নদীকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। কারও নাম উল্লেখ না করে মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, চাঁদপুরের এক নারী মন্ত্রীর সঙ্গে এদের সম্পর্ক আছে।
তিনি বলেন, ইজারা দেওয়ার নামে কর্ণফুলী নদী বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা পরিষদ জড়িত। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী নদী পরিবেশের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদী। একই সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদী। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণা করে নদীর জমি খণ্ড খণ্ড করে মেরে ফেলা হচ্ছে।
এসএইচআর/এনএম/জেডএস