রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভিন্ন পথে হাঁটছে মিয়ানমার : জন কেরি
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমার সরকার ভিন্ন পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি।
শুক্রবার (৯ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন জন কেরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তা প্রশংসনীয়। এই সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় কাজ করে যাবে।
জন কেরি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতেই আমার আজকের এ ঢাকা সফর। বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে বাইডেন প্রশাসন এরইমধ্যে জলবায়ুবিষয়ক প্যারিস চুক্তিতে আবার যোগদান করেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য জলবায়ু বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে। জলবায়ুর ক্ষতিজনিত কারণে পৃথিবীতে বন্যা খরাসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন জলবায়ু বিষয়ে অমনোযোগী থাকায় আমরাই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছি।
কেরি বলেন, বাইডেন প্রশাসন জলবায়ু বিষয়ে যে সম্মেলনের আহ্বান করেছে তার মূল উদ্দেশ্য, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে সবুজ পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশ জলবায়ুজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশ। জলবায়ুজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে কাজ করছে বাংলাদেশ, এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আসন্ন সম্মেলনে বাংলাদেশ যোগ দেওয়ার উৎসাহ প্রকাশ করায় আমরা আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা যাবে।
এ সময় বাইডেনের বিশেষ দূত জানান, প্যারিস চুক্তিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা সেটা বাস্তবায়ন করা হবে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বিশ্বকে সহযোগিতা করবে- এমন প্রশ্নের জবাবে কেরি বলেন, করোনা ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা ভ্যাকসিনেশনে বৈশ্বিক সহযোগিতা চাই। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করে। যার অর্ধেক নির্গমন আর অর্ধেক অভিযোজন খাতে ব্যয় করবে। এটা অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। আমরাও জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
কেরির ঢাকা সফর প্রসঙ্গে মোমেন জানান, আগামী ২২-২৩ এপ্রিল ক্লাইমেট লিডার্স সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় এসেছেন তিনি। চলতি বছর নভেম্বরে জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন কপ-২৬ এ বাংলাদেশ অংশ নেবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন কেরি। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এনআই/এসকেডি