জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ প্রতিমন্ত্রীর
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানি তেলের দামের পরিবর্তন ঘটেনি, সুতরাং এটা নিয়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেইজ এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়েওনি, কমেওনি আগের মতোই আছে। যারা তেল সরবরাহ করে তাদের কমিশনের ক্ষেত্রে একটা ফর্মুলা দেওয়া হয়েছে। অনেকে গ্যাজেটে প্রথম ছবি দিয়ে বলতেছে তেলের দাম কমে গেছে, কিন্তু এরপর যে আফটার ট্যাক্সের মাধ্যমে দাম দেওয়া হয়েছে সেটা দেখানো হয়নি। সুতরাং তেলের দাম বেড়েছে এমন বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।
এদিকে দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জ্বালানি তেলের ডিলার পর্যায়ে কমিশন বৃদ্ধি ও তেলের মূল্য সমন্বয় করেছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সমন্বয় কার্যকর করেছে।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ডিলার বা এজেন্ট পর্যায়ে কমিশন নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। গেজেটে জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ/সমন্বয়ের (বৃদ্ধি/হাস) ক্ষেত্রে অবচয় এবং সব খরচসহ ডিলার/এজেন্টস্ কমিশন এবং ট্যাংকলরির ভাড়াসহ অকটেনে ৪.২৮ শতাংশ, পেট্রোলে ৪.৩৪ শতাংশ, কেরোসিনে ২ শতাংশ ও ডিজেলে ২.৮৫ শতাংশ কমিশন নির্ধারণ করে সরকার।
আরও পড়ুন
মূল্য সমন্বয়ের আগে ডিলার পর্যায়ে ডিজেলের মূল্য ছিল ৮৮ টাকা ২১ পয়সা, যা বর্তমানে নির্ধারিত হয়েছে ১০১ টাকা ৪৪ পয়সা। কেরোসিনের মূল্য ছিল ৮৮ টাকা ৯৭ পয়সা, যা নির্ধারিত হয়েছে ১০২ টাকা ৩১ পয়সায়।
এছাড়া অকটেনের দাম ১০৪ টাকা ২ পয়সা থেকে ১১৯ টাকা ৬২ পয়সা, পেট্রোলের দাম ৯৯ টাকা ৮৮ পয়সা থেকে ১১৪ টাকা ৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু এ মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানি তেলের দামের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম যথারীতি পূর্বের মতোই রয়েছে।
ভোক্তাপর্যায়ে সর্বশেষ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হলেও, ডিলার পর্যায়ে সে হারে কমিশন বৃদ্ধি করা হয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোল পাম্প মালিকরা দাবি করেন, তারা লোকসানের মুখে পড়ছেন। ফলে ডিলার পর্যায়েও তেলের কমিশন বৃদ্ধির দাবি তোলেন তারা।
এ বিষয়ে বারবার মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিলেও কোনো সুরাহা মেলেনি। ফলে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে তেল উত্তোলন,পরিবহন ও পেট্রোলপাম্পে তেল সরবরাহ বন্ধ করে পেট্রোলপাম্প মালিক সমিতি। তাদের দাবি ছিল, জ্বালানি তেল বিক্রয় কমিশন ৭.৫০% নির্ধারণ করা, পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায়ীদের এজেন্ট কমিশন গেজেট আকারে প্রকাশ করা, ট্যাংকলরি ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নয়, এবিষয়ে সু-স্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা ও ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ট্যাংকলরির ইকোনমিক লাইফের জন্য পৃথকভাবে সু-স্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।
সেসময় বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল বলেছিলেন, আমাদের দাবিগুলো পুরোনো। জ্বালানি তেলের দাম যখন ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়, তখন আমাদের কমিশন কমিয়ে দেওয়া হলো। তেলের দাম যদি বাড়ানোই হয়, তাহলে আমাদের কমিশনও বাড়াক। বাস্তবতা হলো আমাদের ইনভেস্টমেন্ট বেড়ে গেছে। সুতরাং আমাদের কমিশনও বাড়াতে হবে।
এর পর মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে মালিক সমিতির একাংশ তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দাবিদাওয়া সমূহ গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করে।
ওএফএ/এমএ