নদীগুলো হায়েনারা দখল করে ফেলছে : নদী রক্ষা কমিশন
বাংলাদেশের নদীগুলো হায়েনারা দখল করে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, গত বছর (২০২২ সালে) এই হায়েনারা ৬৬৮ কোটি সিআরটি বালু চুরি করেছে। যা টাকায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের নদ-নদীর সংজ্ঞা ও সংখ্যা বিষয়ে সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মার্গুব মোর্শেদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক প্রধান হাইড্রোলজিস্ট আখতারুজ্জামান তালুকদার।
এতে জানানো হয়, দেশে বর্তমানে নদীর সংখ্যা ১০০৮টি।
ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আদালতের নির্দেশনায় ঢাকার আশপাশের শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগ এবং বুড়িগঙ্গা দখল ও দূষণমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। আমরা দখলমুক্ত করতে পারলেও দূষণমুক্ত করতে পারিনি। এ নদীগুলো দখলমুক্ত করতে পারলেও পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ দেশের অন্য নদ-নদীগুলো দখলমুক্ত করতে পারিনি।
কর্ণফুলীর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইকোনমিক জোন অথিরিটি (বেজা) নদী দখল করে ইকোনমিক জোন গড়ে তুলেছে। তারা এখন বিভিন্ন কোম্পানিকে লিজ দিয়েছে। কর্নফুলী নদী শুধু পরিবেশগতভাবেই নয়, অর্থনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। এই আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে নদীর কাগজপত্র দিলেও মন্ত্রণালয় বলছে এটা নদীর অংশ না।
নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, কর্ণফুলীকে লিজের নামে টুকরা টুকরো করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। সচেতন মহল, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সবাই মিলে এই কাজ করছে। এই দখলের পক্ষে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও এনজিওকর্মী তারা শক্তভাবে দাঁড়িয়েছে। নদী রক্ষার জন্য নদী রক্ষা কমিশন নিঃসঙ্গ শেরপার মতো কাজ করছে। আমাদের পাশে কেউ নেই। আমাদের যেসব দক্ষ অফিসার যারা ছিল তাদেরকে তাৎক্ষণিক (স্ট্যান্ড রিলিজ) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারণ নদ-নদী রক্ষায় দখলদারদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে ছিল।
তিনি বলেন, মেঘনা নদীর বালু সন্ত্রাসীদের ৩০০ ড্রেজারসহ উৎখাত করেছি। কিন্তু এ অভিযানে জড়িত জেলা প্রশাসক খাদেমুলকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। মেঘনা নদী ইলিশসহ সব মাছে শ্রেষ্ঠ অভয়ারণ্য। চাঁদপুর সদরে ড্রেজার ও ট্রপেলারের আওয়াজে নষ্ট হচ্ছে এসব মাছের উৎস। আজকে তাদের পরিচয় বলতে আমার সমস্যা নেই।
এমআই/জেডএস