‘শ্রেণিবৈষম্যের ঊর্ধ্বে সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা চাই’
অবাণিজ্যিক শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের প্রথম চাওয়া। শ্রেণিবৈষম্যের ঊর্ধ্বে সর্বজনীন এক শিক্ষাব্যবস্থা চাই। যেখানে রাষ্ট্র অর্থ যোগাবে, নিয়ন্ত্রণ করবেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘সার্বজনীন গণমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষনীতি: বর্তমান প্রেক্ষিতে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারের বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি আন্দোলন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন। তিনি বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল বিকাশের জন্য চাই রাষ্ট্রের উদ্যোগ। দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে এখনো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে কম। আর চাই বিদ্যায়তনিক স্বাধীনতা। ক্ষমতাসীনের বিপরীতে কথা হলেই যদি জেল-জুলুম হয়, সেখানে জ্ঞানচর্চার বিকাশ হতে পারে না। অর্থাৎ শিক্ষানীতি ও শিক্ষাদর্শন হবে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও স্বাধীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন বলেন, তৎকালীন উচ্চশিক্ষার দর্শন মুক্তিকামী ছিল বলেই স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। বর্তমানে সাম্প্রদায়িকতা ও বৈষম্য শিক্ষানীতিকে গ্রাস করেছে। আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে গণমুখী অবাণিজ্যিক শিক্ষাই সর্বপ্রথম শর্ত।
সেমিনারের বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও শিক্ষা সার্বজনীন হয়নি। প্রাথমিকেই শিক্ষা ব্যবস্থা বহুধারায় বিভক্ত। এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা ১২ রকমে দেওয়া সম্ভব। এইসব ধারা থেকে প্রাপ্ত সার্টিফিকেটেও মানের তারতম্য রয়েছে। কোন কোন মাধ্যমে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। দেশে বিজ্ঞান চর্চার আবহ নেই, মানবিক বিদ্যা চর্চার মুক্ত পরিবেশ নেই। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য বাড়ছে।
গণসংগীতশিল্পী ও নাগরিক অধিকারকর্মী মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক মঈনুল আহসান সাবের, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আকমল হোসেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ প্রমুখ।
ওএফএ/এমএসএ