ফায়ার সেফটির জন্য ডিএনসিসি নির্দেশনা দিয়েছিল, মানেনি ব্যবসায়ীরা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেছেন, ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা দেওয়ার পরও মার্কেট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর পুড়ে যাওয়া মার্কেট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সেলিম রেজা বলেন, ডিএনসিসির পক্ষ থেকে আগে কৃষি মার্কেটে ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা পরিদর্শন করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা ফায়ার সেফটি পাইনি। আগুন লাগলে নেভানোর ব্যবস্থা যেন থাকে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আগেই বলা হয়েছিল। কিন্তু মার্কেট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটের যে তালিকা করেছে সিটি কর্পোরেশন, এর মধ্যে কৃষি মার্কেট ছিল না।
কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস বলেছে, মার্কেটটিতে ছিল না অগ্নি নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, যেই কমিটি তখন কাজ করেছে সে সময় এই মার্কেটটি তালিকায় ঢোকেনি। রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলোর মধ্যে মোহাম্মদপুরের দুটি মার্কেট রয়েছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া কৃষি মার্কেটেও অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না।
তাহলে এই মার্কেটটি কেন তালিকায় আসলো না, এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিম রেজা বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৮টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ভবন ও যেই মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে ১৫ দিন বা ১ মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে আমরা ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে দিয়েছি। কোনো বাধা, কোনো কিছুর মুখেই আমরা আর থামবো না। এই ভবনগুলোতে ব্যবসায়ী এবং বসবাসকারী যারাই থাকুন তাদের সেখান থেকে বের করে দিয়ে ভবনগুলোকে সিলগালা করে দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ভবনগুলোকে ফাঁকা করতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে দিয়েছি। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন।
আজকের আগুনে এখনও কৃষিমার্কেটের ২১৭টি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের তালিকা ডিএনসিসি পেয়েছে জানিয়ে সেলিম রেজা বলেন, অবৈধ দোকানগুলো ছিল ফুটপাতে। আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত আমরা যেই তথ্য পেয়েছি ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসও বলেছে ভেতরে পর্যাপ্ত অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এ ব্যাপারে আমাদের সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আগেই ফায়ার সেফটি বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, এখানে বাজার সমিতি আছে, তাদের আমরা এই কাজগুলো করার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছি, অনুরোধ করেছি। এই কাজগুলো না করার কারণেই আমরা এখন এর ভয়াবহতা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, মার্কেটের ব্যবসায়ী যারা আছেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমরা তাদের তালিকা করছি। আমরা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়াবো। আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। ডিএনসিসির পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব তাদের সহযোগিতা করা হবে।
মালিক সমিতি ও ব্যবস্থাপনা কমিটি দায়ী কি-না এমন প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তদন্ত করে জানা যাবে কার দায় ছিল। তদন্তেই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।
এ সময় ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা করবো। তারপর আমরা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মানবিক সহায়তা করার চেষ্টা করব।
জেইউ/এনএফ