রাজধানীতে প্রথম দিনই উপেক্ষিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে সাত দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা চলছে দেশে। তবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের প্রথম দিনেই তা উপেক্ষিত হচ্ছে রাজধানীবাসীর কাছে।
কঠোর নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয়, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবে বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। কিন্তু নগরবাসী জরুরি কাজ ছাড়াই বাড়ি থেকে বের হয়ে বিভিন্ন চা স্টলে ভিড় জমাচ্ছেন। রাস্তায় কিংবা অলিগলিতে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। এ সময় তারা মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকে মুখে মাস্ক পরে থাকলেও তা নাকের নিচে নামিয়ে রাখতে দেখা যাচ্ছে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহাজাদপুর, গোপিপাড়া, গুলশান লেক পাড় ও বাঁশতলা এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তবে অলিগলিতে চা স্টল থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকারের দোকানপাট খোলা রয়েছে। নানা ধরনের দোকানপাটে মানুষজনের ভিড় দেখা গেছে। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে চা দোকানের মালিকরা শাটার নামিয়ে অল্প জায়গা ফাঁকা করে চা ও সিগারেট বিক্রি করছেন। এসব চা দোকান ঘিরে মানুষজনের আড্ডা বসছে বিভিন্ন অলিগলিতে।
রাজধানীর শাহজাদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার মাঝখানে মানুষজন দাঁড়িয়ে জটলা করে আড্ডা দিচ্ছেন। রাস্তার মোড়ে মোড়ে রয়েছে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই এসব যানবাহনের যাত্রীরা চলাফেরা করছেন।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারাদিন ঘরে বসে থেকে একঘেয়েমি সৃষ্টি হয়, তাই সন্ধ্যায় একটু রাস্তায় ঘুরতে এসেছেন। ঘুরতে আসা এসব মানুষের অনেকেরই মুখে মাস্ক ছিল না। যারা মস্ক পরেছেন তাদের অনেকেই আবার নাকের নিচে নামিয়ে রেখেছেন। এছাড়া তিন ফুট দূরত্বের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারটি পাত্তাই পাচ্ছে না অনেকের কাছে।
রাজধানীর বাঁশতলা এলাকায় দোকানের শাটার অর্ধেক খুলে চা বিক্রি করছেন মোহাম্মদ জামাল। নির্দেশনা থাকলেও দোকান কেন খুলেছেন জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সারাদিন স্টল বন্ধ ছিল। কোনো বেচাকেনা হয় নাই। এখন সন্ধ্যার পর মানুষজন এসেছে একটু চা খেতে, তাই খুলেছি। একদম বন্ধ রাখলে সংসার চলবে কীভাবে?
এদিকে রিকশাওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিয়ম থাকলেও পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে তাদের এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে হচ্ছে। একেবারে যাত্রী বহন না করলে সংসার চালবে না জানিয়ে বলেন, ঘরে বসে থাকলে তো না খেয়ে মরতে হবে। আমরা ঘরে বসে থাকলে তো আমাদের কেউ টাকা দিয়ে আসবে না।
তবে এসব এলাকায় নিষেধাজ্ঞার নিয়ম অমান্য হলেও তা বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো সংস্থাকে দেখা যায়নি। সন্ধ্যার পর পুলিশ কিংবা র্যাবের কোনো টহল টিমকেও দেখা যায়নি নিষেধাজ্ঞার নিয়ম বাস্তবায়নের জন্য রাস্তায় থাকতে।
এমএসি/এইচকে