একনেকে উঠল চাঁদপুর-চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প
জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নতুন মেডিকেল কলেজ ও নতুন একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি নার্সিং কলেজ প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আলাদা আলাদা দুটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য একনেকে তোলা হয়েছে। ‘চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন’ এবং ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সিএমইউ) স্থাপন’ প্রকল্পটি আজ একনেকে অনুমোদন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সিএমইউ) স্থাপন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের পর চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর, ফৌজদারহাটে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও সেবার মান এবং সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণসহ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ১০টি আবাসিক ভবন নির্মাণ, ১৪টি অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, পরামর্শক ব্যয়, চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ক্রয়, এয়ার কুলিং সিস্টেমস, লিফট সরবরাহ, অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদি, অন্যান্য বৈদ্যুতিক ও মেকানিক্যাল সরঞ্জামাদি, অফিস সরঞ্জামাদি, আইসিটি যন্ত্রপাতি হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এবং পুরাতন স্থাপনার অপসারণ।
কর্মকর্তারা আরও জানান, একনেকে অনুমোদনের পর ‘চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নেও সম্পূর্ণ সরকারি অর্থ ব্যয় হবে। অনুমোদনের জুলাই ২০২২ হতে জুন ২০২৫ সালে প্রকল্পটি চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে─ চাঁদপুর জেলা ও তৎসংলগ্ন এলাকার ২৬ লক্ষ জনসাধারণের জন্য আধুনিক ও বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ, মেডিকেল শিক্ষা ও নার্সিং শিক্ষাকে সম্প্রসারণ করে দক্ষ ও মানসম্মত চিকিৎসক ও নার্স তৈরি করা এবং প্রস্তাবিত চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবছর মানসম্মত ৫০ জন চিকিৎসক ও ১০০ জন নার্স তৈরি করা।
প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ৩০.১২ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১০টি আবাসিক ভবন, ১১টি অনাবাসিক ভবন, লিফট ক্রয়, ১২ হাজার ৯২৭টি মেডিকেল যন্ত্রপাতি, স্থানীয় প্রশিক্ষণ এবং ৩টি মোটরযান ক্রয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা ও এর আশেপাশের প্রায় ৩.৫০ কোটি লোককে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভাগ চালুকরণ এবং উন্নতমানের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসা জনশক্তি ও অন্যান্য সুবিধাদি বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি সমাপ্ত করার জন্য উদ্যোগী বিভাগ, বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও আইএমইডি’কে নিবিড় তদারকি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা ও তৎসংলগ্ন এলাকার প্রায় ২৬ লাখ জনগণের জন্য আধুনিক ও বিশেষায়িত সেবা প্রদান করা। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রতিবছর ৫০ জন চিকিৎসক ও ১০০ জন নার্স তৈরি করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পে প্রস্তাবিত ৩০.১২ একর জমির পরিবর্তে ১৫.৮৪ একর জমিতে ‘চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ’টি প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে প্রাক্কলিত ব্যয় কমে যাবে।
এসআর/এমএ