ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তথ্য সহযোগিতা চায় সিআইডি
অনলাইন বা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ডলার, শেয়ার বা ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচার কানাডা ও দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেটাভার্স ফরেন এক্স চেঞ্জ গ্রুপ ইনকর্পোরেটেডে (এমটিএফই) প্রতারিত হওয়া গ্রাহকদের কাছ থেকে তথ্য সহায়তা চেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুধু এমটিএফই নয়, দেশে সক্রিয় তবে অনিবন্ধনকৃত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক এ ধরনের প্রতারক চক্রের এমএলএম ব্যবসা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। অ্যাপস এবং অনলাইনভিত্তিক যেকোনো ব্যবসায় বিনিয়োগকারীদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার দরকার মনে করছে তদন্ত সংস্থাটি।
সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম এ ব্যাপারে নজরদারি করছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের প্রতারক চক্রের তথ্য এবং অভিযোগ জানাতে সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে সিআইডি।
আরও পড়ুন : ডেসটিনির মতো শুয়ে-বসে আয়ের লোভ দেখিয়ে উধাও এমটিএফই
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান জানান, এমটিএফই অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকদের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানানো হয় এবং লেনদেন পরিচালনা করা হয়। নিজেদের ছায়া প্ল্যাটফর্মে ট্রেড করার সুযোগ দিয়ে এই অ্যাপ সম্প্রতি আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
বাংলাদেশে কোনো অফিস না থাকলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ঘরে বসে সহজে আয়ের পথ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ইউটিউবে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। বিভিন্ন ভিডিও ও বিজ্ঞাপন দেখে ভুক্তভোগীরা আগ্রহী হন। সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হন একজন আরেকজনকে দেখে, এক্ষেত্রে রেফারেল বা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কাজ করে। এমটিএফইও এমএলএম পদ্ধতিতে কাজ করেছে। বেশি লাভের আশায় লাখ লাখ মানুষ অ্যাপসটিতে বিনিয়োগ করেন।
কিছু মানুষ অবশ্য লাভের অংশ পেয়েছে। তবে চূড়ান্ত বিচারে বিনিয়োগের সব অর্থই খোয়াতে হয় গ্রাহকদের। ঢাকাসহ বরিশাল, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং সাতক্ষীরাতে প্রতারণা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সারাদেশে চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাহক এমটিএফই-এর মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা খুইয়েছেন।
আরও পড়ুন : এমটিএফই অ্যাপে কোটিপতি নুরুন্নবী, নতুন ফাঁদ জিটিসি-এক্স
আজাদ জানান, গুগল প্লে স্টোর থেকে যে কেউ এমটিএফই অ্যাপসটি ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারতেন। রেজিস্ট্রেশনের পর তাদের নিজস্ব ওয়ালেটে ট্রেড করার জন্য ডলার রাখতে হতো। ডলারের পরিমাণ অনুযায়ী তাদের প্রতিনিয়ত প্রলোভন দিয়ে লাভের কথা বলা হত। ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলে দিনশেষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হবে—এমন কল্পিত মুনাফার কথাও বলা হতো।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হয়েছে গ্রাহকদের। ভার্চুয়ালি ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ডলার কেনাবেচা করা হলেও লভ্যাংশ দেওয়া হতো মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে।
শুধু এমটিএফই নয়, দেশে এখনও সক্রিয় আছে অনিবন্ধনকৃত মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক এ ধরনের প্রতারক চক্র, যেখানে বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএম ব্যবসা এবং ক্রিপ্টো কারেন্সিতে লেনদেন অবৈধ ও নিষিদ্ধ। অ্যাপস এবং অনলাইনভিত্তিক যেকোনো ব্যবসায় বিনিয়োগকারীদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার দরকার।
সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স টিম এ ব্যাপারে গভীর নজরদারি চালাচ্ছে। ভুক্তভোগী ও প্রতারিত গ্রাহকদের এ প্রতারক চক্র সম্পর্কে তথ্য দিয়ে বা অভিযোগ জানাতে সিআইডি সাইবার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হলো।
যোগাযোগের ঠিকানা
ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/cpccidbdpolice/
ইমেইল: [email protected]
24/7 কন্টাক্ট নম্বর: +8801320010148 অথবা জরুরি জাতীয় সেবা 999
জেইউ/এসকেডি