‘কোম্পানি রসিদ দেয় না, অথচ জরিমানা করে আমাদের’
আমরা যখন কোম্পানি থেকে ডিম আনি, রসিদে শুধু ডিমের পরিমাণ দেওয়া থাকে, কত টাকার ডিম কেনা হলো সেটা দেওয়া থাকে না। তারা না দিলে আমরা কি জোর করে নেবো? জোরাজুরি করলে ডিলারশিপ বাতিল হয়ে যায়। আমরা কোথায় যাব?
রাজধানীর কাপ্তানবাজারে ডিমের পাইকারি মার্কেটে ডিম বিক্রেতা জহিরুল হকের বক্তব্য এটি। ডিমের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আজ (শনিবার) এই বাজারে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে জহিরুলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ক্রয় রসিদ ও বিক্রয় রসিদে ডিমের দাম উল্লেখ না থাকায় এ জরিমানা করা হয়।
জহিরুল হক বলেন, হ্যাঁ, আমাদের ভুল হয়েছে যে আমরা পাকা রসিদ দিই না, কার্বন কপি রাখি না। কিন্তু আমাদের কোম্পানিই তো পাকা রসিদ দেয় না। সেটার সমাধান করবে কে?
জহিরুল হকের মতো জরিমানা করা হয়েছে মোস্তাফিজ ট্রেডার্সের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানকেও। তিনি বলেন, পাকা রসিদ দেখাতে পারিনি বলে জরিমানা করল। কিন্তু কোম্পানিই তো আমাদের রসিদ দেয় না। কাজী ফার্মস, প্যারাগন, ডায়মন্ড তারা কেউই পাকা রসিদ দেয় না। দিলে একটা সিস্টেমে থাকত বিষয়টা। অথচ ভোক্তা তো তাদের ধরছে না। শুধু আমাদের জরিমানা করছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল। অভিযান শেষে তিনি বলেন, আমরা কিছু প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম পেয়েছি, তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজ বাজার ঘুরে ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে যেগুলো পেয়েছি, সেগুলো প্রতিবেদন আকারে তৈরি করে মহাপরিচালকের কাছে দেব এবং সে অনুযায়ী অধিদপ্তর ব্যবস্থা নেবে। যেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নেব।
গত কয়েকদিনে ডিমের দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ফার্মের মুরগির ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি। অর্থাৎ এক পিস ডিমের দাম ১৫ টাকা। গত সপ্তাহেও এক পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ১১ থেকে ১২ টাকায়, অর্থাৎ হালি ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা।
এ ছাড়া দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা ডজন। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। সোনালি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা।
ওএফএ/এনএফ