‘আসল-নকল পর্যবেক্ষক দেখার দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের’
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কে আসল কে নকল সেটা দেখার দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, নির্বাচন কমিশনের নয়।
বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
একটি সংস্থার মিটিং করে গেল, তাদের মধ্যে দুজনের পরিচয়ই জানা যায়নি, দুজন সাংবাদিক। বিদেশ থেকে যেন এ ধরনের লোক না আসে সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ থাকবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, আমাদের বিদেশে কোনো অফিস নেই। আমরা দেশেরটার খোঁজ খবর নিতে পারি। যতখানি সম্ভব খোঁজ নিয়ে তারপর আমরা অনুমোদন দিই। তবে আন্তর্জাতিক সংস্থার কে আসল আর কে নকল সেটা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। সেটা দেখার দায়িত্ব হলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
তিনি বলেন, যেসব দেশ থেকে পর্যবেক্ষকরা আসবে, সেসব দেশের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েই ভিসা দেবেন। কোনো সংস্থাকে কিন্তু নাম ধরে ডেকে এনে দাওয়াত দেওয়া হয় না। আমরা ওপেন বলি যে আপনারা আসেন।
ইসি আলমগীর বলেন, আমরা যেটা চাইব সেটা হলো, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করেছেন, সেটা ব্যক্তি হোক আর সংস্থা, এ ধরনের অভিজ্ঞ যারা তারাই যেন আসেন। তাহলেই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। তারা সঠিকভাবে নির্বাচনটা পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করতে পারবেন। এখন যাদের অভিজ্ঞতা নাই তাদের বিষয়টা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে।
সম্প্রতি যে চারজন এলো, তাদের বিষয়ে কী বলবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কি না সে বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তারা একটা আন্তর্জাতিক ফোরাম হিসেবে এসেছে। আমাদের সঙ্গে যারাই আলোচনা করতে চায় তাদেরই আমরা সময় দিই। সরকার যদি ভিসা দেয়... আমরা তো বুঝতে পারব না তারা পর্যবেক্ষক নাকি পর্যবেক্ষক নয়।
তারা পর্যবেক্ষক নয়, গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন এসেছে। নিবন্ধিত একটি সংস্থা কেন তাদের এনে ছলচাতুরি করল, তার জবাবদিহিতা চাইবেন কি না? -এমন প্রশ্নে ইসি আলমগীর বলেন, আমরা তো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ভবিষ্যতে আমরা দেখব। গণমাধ্যমের খবর দেখে তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব না। আমাদের তো আরও অনেক কাজ আছে।
গত নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক খুবই কম ছিল। আপনারা কি আশা করছেন এ বছর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বেশি পাবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি না শুধু, আমরা আহ্বান জানিয়েছি, যত বেশি সংখ্যক আসতে চান আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সাদরে আমন্ত্রণ জানাব।
গত বছর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সঙ্গে সমন্বয়হীনতা ছিল, আগে অনেকে ভিসা পায়নি বলে আসতে পারেনি। এবার ওই ধরনের কোনো উদ্যোগ ইসির থাকবে কি-না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে সিস্টেমটা হলো কাউকে ভিসা দেওয়া হবে কি না সেটা রাষ্ট্রের ব্যাপার। তবে আমাদের পক্ষ থেকে উদারনীতি থাকবে যে যত সংখ্যক তারা আসুক। বিষয়টা দেখবে, ভিসাটা দেয় হচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। আর বিদেশ থেকে আসতে হলে সেই ভিসা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বাসিগুলো, হাইকমিশনগুলো রয়েছে, সেখান থেকে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এতে দুইটা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা লাগে। আমরা সহযোগিতার জন্য দুইটা মন্ত্রণালয়কেই লিখিত চিঠি দেব যে বিদেশি পর্যবেক্ষক যারা আসবে তাদের ভিসা দেওয়ার বিষয়ে যেন সহযোগিতা করে। কিন্তু কাকে ভিসা দেবে, কাকে দেবে না সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে তাদের ওপর।
এসআর/এসএম