সংকট কাটাতে সংলাপ দরকার, পিটার হাসকে সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। বৈঠকে রাষ্ট্রদূতকে সিইসি বলেছেন, সংকট সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ প্রয়োজন। তাদের এক টেবিলে বসা উচিত, একসঙ্গে চা পান করা উচিত।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন সিইসি হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, যে সংকটটা বিরাজ করছে তা রাজনৈতিক। এর সঙ্গে আমাদের কাজের কোনো সংঘাত নেই। এ সমস্যাগুলো যদি রাজনৈতিকভাবে সমাধান হয়ে যায়, তাহলে আমাদের জন্য নির্বাচন আয়োজন অনেক কমফোর্টেবল হবে।
বৈঠকে আরপিও সংশোধন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নির্বাচনের দিন মিডিয়ার মোটরসাইকেল ব্যবহারসহ আরও বেশকিছু বিষয়ে জানতে চান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। কমিশনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে তাকে যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিইসি।
আরও পড়ুন>>> অক্টোবরে আসবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-পর্যালোচনা টিম
সিইসি বলেন, কমিশন প্রত্যাশা করে, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে কতগুলো বিষয় নিয়ে প্রকটভাবে সংকট রয়েছে, সেগুলো যেকোনো মূল্যে সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। আমরা চাই একটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। যে স্থিতিশীল পরিবেশে আগামী নির্বাচন হবে। সংলাপ নিয়ে ইসির উদ্যোগ না থাকলেও নিজেদের মধ্যে সংলাপ ও একসঙ্গে বসার আহ্বান জানান সিইসি।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি (রাষ্ট্রদূতকে), ওনারাও বিশ্বাস করেন, (সমস্যা সমাধানে) রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগ (সংলাপ) প্রয়োজন। ডায়ালগ ছাড়া এ সংকটগুলো আসলে রাজপথে মীমাংসা করার বিষয় নয়। কমিশন মনে করে, রাজনৈতিক দলগুলোর এক টেবিলে বসা উচিত, একসঙ্গে চা পান করা উচিত। তারপর আলোচনা করে সংকট নিরসনের চেষ্টা করতে হবে।
বৈঠকে আরপিও সংশোধন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নির্বাচনের দিন মিডিয়ার মোটরসাইকেল ব্যবহারসহ আরও বেশকিছু বিষয়ে জানতে চান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। কমিশনের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে তাকে যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিইসি।
সিইসি বলেন, ওনারা আরপিও সংশোধনের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। উনিও দেখেছেন, শুনেছেন আরপিও সংশোধনে আমাদের ক্ষমতা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা ওনার কাছে ব্যাখ্যা করেছি কীভাবে এটা (নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা) বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের বিষয়ে উনি (পিটার হাস) শুনেছেন যে, এখানকার মোর ভাইব্রেন্ট পলিটিক্যাল পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। যাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে তারা, ওইভাবে ভাইব্রেন্ট নয়। এর জবাবে আমরা বলেছি, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিতে গেলে আমাদের বিধিমালা অনুযায়ী যে ধরনের ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হয় সেগুলো আমরা স্ট্রিক্টলি ফলো করেছি। এজন্য অনেক দল নিবন্ধন পাননি। মাত্র দুটি দল নিবন্ধন পেতে পারে, এখনও পায়নি। তারা উপজেলা ও জেলা লেভেলে ক্রাইটেরিয়াগুলো পূরণ করেছে।
সিইসি বলেন, আমরা ওনাকে বলেছি, নির্বাচনে স্বচ্ছতার জন্য মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তখন উনি জানতে চেয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরা মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি পাবে কি না? জবাবে আমরা বলেছি, এ বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আছে। আমরা স্থানীয় পর্যায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বলব ওখানকার অবস্থা বিবেচনা করে তারা মোটরসাইকে ব্যবহারের অনুমতি দেবেন। আমরাও কেন্দ্রীয়ভাবে এ বিষয়টি পর্যালোচনা করে অবহিত করব।
এর আগে বেলা ১১টা ১০ মিনিটে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সিলর মি. অরটুরো হেইনস। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
এসআর/এসএম