নির্বাহী আদেশে বাড়ল গ্যাসের সঞ্চালন ও বিতরণ চার্জ
নির্বাহী আদেশে গ্যাসের সঞ্চালন ও বিতরণ চার্জ বাড়িয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির সঞ্চালন চার্জ ৪৭ পয়সা (প্রতি ঘনমিটার) থেকে বাড়িয়ে ১.০২ টাকা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উপসচিব শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের সই করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন সঞ্চালন চার্জ গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। তবে ভোক্তার গ্যাসের দাম অপরিবর্তিত থাকছে।
নতুন আদেশে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির বিতরণ চার্জ ১৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৬ পয়সা, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির ১৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৪ পয়সা করা হয়েছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ১৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২১ পয়সা, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ১৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ পয়সা, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ২৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩৭ পয়সা, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড ১১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৮ পয়সা করা হয়েছে। আদেশে অন্যান্য বিতরণ কোম্পানিকে সিস্টেম লস না দিলেও তিতাস গ্যাসকে ২ শতাংশ হারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম বাড়ায়র জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আর গণশুনানির মধ্য দিয়ে গত বছরের জুনে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।
গ্যাসের বিতরণ কোম্পানিগুলো অনেক বছর ধরেই মুনাফা করে চলছে। তাদের মুনাফার কিছুটা নজির পাওয়া যায় প্রফিট বোনাস প্রদানের হার থেকে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড তার ৩৮৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যেককে ১৮ লাখ টাকা করে প্রফিট বোনাস দিয়েছে। অতীতে জিটিসিএল, তিতাস গ্যাস, পিজিসিবি ও অন্যান্য কোম্পানিতে এই প্রফিট বোনাস প্রদানের প্রতিযোগিতা ছিল।
সর্বশেষ গত বছরের মার্চে গ্যাসের দামের বিষয়ে গণশুনানি হয়। সেবার গ্যাসের দামের পাশাপাশি বিতরণ চার্জ বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল কোম্পানিগুলো। ওই শুনানিতে বিইআরসি টেকনিক্যাল কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে— সবগুলো কোম্পানিই মুনাফায় রয়েছে।
শুনানিতে দেখা যায়, কোম্পানিগুলো পরিচালন বহির্ভূত আয় এতে বেশি, তাদের বিতরণ চার্জ আদায় না করলেও মুনাফায় থাকে। অর্থাৎ হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক আমানত, নানা রকম মাশুল দিয়েই মুনাফায় থাকে কোম্পানি। এ কারণে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিতরণ কোম্পানির কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কিছুটা মাশুল দেওয়ার মতামত দেয় টেকনিক্যাল কমিটি। কর্ণফুলীর তৎকালীন বিদ্যমান দর ঘনমিটার ২৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯ পয়সা করার সুপারিশ দেওয়া হয়।
অন্যান্য বিতরণ কোম্পানির বিতরণ চার্জ বিলুপ্ত করার সুপারিশ আসে হিসাব থেকে। একমাত্র সঞ্চালন কোম্পানি জিটিসিএল বর্তমান চার্জ ৪২ পয়সা থেকে ৬ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ দেওয়া হয়। পরে জুন মাসে দেওয়া আদেশে ৫ পয়সা বাড়িয়ে ৪৭ পয়সা করা হয়।
ওএফএ/কেএ