রানা প্লাজা ধসে জড়িতদের জামিন বাতিলসহ ১৪ দাবি শ্রমিক ফেডারেশনের
রানা প্লাজার দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যারা জামিন পেয়েছেন তাদের জামিন বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়াসহ ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
সোমবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফেডারেশনের আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
ফেডারেশনের দাবিগুলো হচ্ছে- রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ মামলার সব আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া; শুনানিতে সোহেল রানার জামিন নামঞ্জুর করা; জামিনপ্রাপ্ত অন্যান্য সব আসামিদের জামিন বাতিল করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া; রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের সুব্যবস্থা করা; রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়ার সুব্যবস্থা করা; সব ক্রেতা ও ব্র্যান্ডকে অ্যাকর্ড চুক্তি স্বাক্ষর করা; গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করা; ইপিজেডসহ সব কারখানায় অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন ও যৌথ দর কষাকষি করার স্বাধীনতা দেওয়া।
এছাড়াও সব ক্রেতা ব্র্যান্ড ও মালিকদের কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত বিমায় অংশগ্রহণ করা; সব শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনাজনিত বিমার আওতায় আনা; সব শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা; সব শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সব প্রকার সহিংসতা ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন ও আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর করা।
সমাবেশে ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধ্বসে সরকারি হিসাবে এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান এবং আড়াই হাজার শ্রমিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আহত হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন সহস্রাধিক শ্রমিক। সময়ের সাথে সাথে এ শ্রমিকদের দুর্ভোগ, দুর্দশা ও মানবেতর জীবনের চিত্র সবার গোচরের আড়ালেই পরে যাচ্ছে। যাদের মধ্যে অন্তত এক হাজার শ্রমিক পঙ্গুত্ব বরণ করে বেঁচে আছেন।
তিনি বলেন, এ মর্মাহত দুর্ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভবন মালিক সোহেল রানা, ৫টি গার্মেন্টস মালিক ও সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হলে সরকার বিভিন্ন আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে, যা গত ১০ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। এর মধ্যে সোহেল রানা ব্যতীত মামলার বাকি সব আসামি জামিনে আছেন। কিছুদিন আগে সোহেল রানার জামিন মঞ্জুর হলে দেশের মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে গত ৮ মে সোহেল রানা জামিন না পেলেও আজ ১০ জুলাই তার জামিন বিষয়ে আপীল বিভাগে জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তাই এ সমাবেশ থেকে আমরা সোহেল রানার জামিন নামঞ্জুরসহ ১৪ দফা দাবি জানাই।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক উর্মি আক্তার, প্রচার সম্পাদক ইয়াহিয়া খান প্রমুখ।
এমএইচএন/এফকে