গণপরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব
দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বেড়ে যাওয়ায় ১৮টি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে একটিতে গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ আসনে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর তাই অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করতে বাস ও মিনিবাসে শতকরা ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ভাড়া পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি বৈঠক চলে। বৈঠকের পর পৌনে ৮টায় সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা এবং প্রস্তাবনার ভিত্তিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাবটি পাঠানো হচ্ছে। মঙ্গলবার (৩০) শবে বরাতের কারণে সরকারি ছুটি। দুই একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও বলেন, করোনার বর্তমান পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সেই প্রজ্ঞাপনে গণপরিবহনে যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। গণপরিবহনের ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের অধিক যাত্রী নেওয়া যাবে না মর্মে নির্দেশনা রয়েছে।
পাশাপাশি আরও একটি নির্দেশনা হচ্ছে, করোনার ঝুঁকি রয়েছে এমন এলাকায় গণপরিবহন চলাচল শিথিল বা প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে। তবে এ বিষয়টি ঠিক করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই প্রজ্ঞাপনটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে পাওয়ার পর আমরা দ্রুত মালিকপক্ষসহ ভাড়া নির্ধারণ কমিটির বৈঠক ডাকি। এতে পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব প্রস্তাব করেছেন যে ২০২০ সালে মে যেভাবে ভাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল, সেভাবেই বিদ্যমান ভাড়ার ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ৫০ ভাগ যাত্রী বহন করবেন। এই প্রস্তাবটি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে জানাবো। এরপর এটি কার্যকর হবে। তবে অবশ্যই সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত হওয়ার পর যাত্রী এবং গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে।
গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব এবং ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী বহন এবং করোনার নিয়ম না মানার অভিযোগ সম্পর্কে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, গতবছর প্রস্তাবনার দুদিন পর মন্ত্রণালয় থেকে তা কার্যকর হয়েছিল। এবার করোনা ফের বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই সপ্তাহের জন্য সরকারি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তা পরিপালনে কঠোর হবে বিআরটিএ। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শন করা হবে না। বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে সক্রিয় থাকবেন।
সভা শেষে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, সভায় আমাদের নতুন করে কোনো প্রস্তাব নেই। গতবছর করোনাকালে যে প্রস্তাবনায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধিতে গাড়ি চলাচল করছিল, সেভাবে আমরা চালিয়ে এসেছিলাম।
এই প্রস্তাবনায় হচ্ছে- যাত্রী হবে ৫০ শতাংশ, আর ভাড়া বাড়বে ৬০ শতাংশ। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসার পর এটি কার্যকর হবে। তবে তিনি বিআরটিএ-কে অনুরোধ করেন, মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসার আগে যেন গণপরিবহন কোনো মামলার শিকার না হয়।
জেইউ/এমএইচএস