প্রত্যক্ষদর্শী, অকাট্য প্রমাণের অভাবে ‘অজ্ঞাতরা’ অধরা
মেট্রোরেলে ঢিল ছুড়ে গ্লাস ভাঙার ঘটনার দুই মাস অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অজ্ঞাত আসামিদের পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, শত শত সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে ঢিল নিক্ষেপকারীকে শনাক্ত করা যায়নি। পাঁচজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও, প্রত্যক্ষদর্শী এবং অকাট্য প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি কাফরুল পুলিশ।
তবে পুলিশের সন্দেহ, সন্দেহভাজন পাঁচজনের মধ্যে একজন হবেন ঢিল নিক্ষেপকারী।
গত ৩০ এপ্রিল আনুমানিক দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় কাফরুল থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন ঢাকা মেট্রোরেল লাইন-৬ এর সহকারী ব্যবস্থাপক (লাইন অপারেশন) মো. সামিউল কাদির। মামলা নং ৩। আসামি অজ্ঞাত।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৩০ এপ্রিল আনুমানিক বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের সময় আমি স্টেশন কন্ট্রোলার মিরপুর-১০ থেকে জানতে পারি, আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তরগামী মেট্রো ট্রেন কাজীপাড়া স্টেশনে প্রবেশের পূর্ব মুহূর্তে স্টেশনের পূর্ব কাজীপাড়ার পূর্বপাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার লক্ষ্যে ঢিল নিক্ষেপ করেছে। এতে একটি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। যার ক্ষতির পরিমাণ ১০ লাখ টাকা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কাফরুল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন্স) মো. আব্দুল বাতেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনের পূর্ব পাশের একাধিক সিটিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অর্ধশত স্থানীয় সন্দেহভাজনকে। তবে কোনো কূলকিনারা হয়নি। খোঁজ মেলেনি ঢিল নিক্ষেপকারীর। তবে আমাদের সব ধরনের চেষ্টা চলছে।
এব্যাপারে কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে বহুতল অনেক ভবন রয়েছে। কোনো ভবন বা ছাদ থেকে ঢিলটি ছুড়ে মারা হয়ে থাকতে পারে। তবে আমরা ঘটনার সম্ভাব্য এলাকার শত শত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছি। কোনো ফুটেজে ঢিলের চিত্র ধরা পড়েনি।
‘অনেক চেষ্টা করেও ঢিলের ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর খোঁজ আমরা পাইনি। যে কারণে দোষীকে শনাক্ত করা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’
ওসি বলেন, ‘আমরা ৫/৬ জনকে ঘোর সন্দেহ করছি। তাদের পুলিশ হেফাজতে নানাভাবে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কেউ স্বীকার করেনি। তবে তাদের মধ্যেই একজন এই কাজ করতে পারে বলে সন্দেহ। কিন্তু শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে তো কারো বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। দরকার সাক্ষ্য ও অকাট্য প্রমাণ। সেটা আমরা এখনো পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘সমস্যা তো উভয় দিকেই। মেট্রো স্টেশনের বাইরে ওপরের দিকে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। আবার স্টেশনের বাইরে, বামে-ডানে, উত্তর-দক্ষিণে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। তাদের সিসি ক্যামেরা শুধু প্লাটফর্মে ফোকাস করা। যে কারণে কোনো প্রমাণ আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি।’
‘আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। একাধিক টিম কাজ করছে। তবে শেষ মেষ প্রমাণ না মিললে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ও পরামর্শ অনুযায়ী মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে’, বলেন ওসি হাফিজুর রহমান।
জেইউ/জেডএস