ঘুষ কেলেঙ্কারি : দুদকের আরও দুই কর্মচারী বরখাস্ত
ঘুষ লেনদেনের সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী গৌতম ভট্টাচার্য্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতারণার মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে ঘুষের টাকা দাবির অভিযোগে চট্টগ্রামে পুলিশের হাতে আটক দুদকের গাড়িচালক মো. সফিউল্ল্যাহ ও কনস্টেবল ইমরান হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করেছে দুদক।
রোববার (২৫ জুন) তাদের সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের চেয়ারম্যানের পৃথক আদেশে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন চাকরিবিধি ২০০৮ এর ৩৯ (খ) ৩৯ (ছ) ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১১ জুন চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার বনৌজা নামের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে দুদকের গাড়িচালক মো. সফিউল্যাহ ও কনস্টেবল এমরানকে আটক করে পুলিশ। যদিও দুদকের পক্ষে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা থেকে ওই দুই কর্মচারীকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছিল। এক ব্যবসায়ীর নামে নিজেরাই দুদকে অভিযোগ জমা দিয়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নিতেন দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কনস্টেবল এমরান হোসেন ও তার সহযোগীরা। ওইদিন বনৌজা রেস্টুরেন্টে টাকা আনতে গেলে পুলিশের হাতে আটক হন সফিউল্যাহ ও এমরান। এরপর ওই ঘটনার তাদের চট্টগ্রাম কার্যালয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করে দুদক।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, শুধু এটা নয়, কদিন আগে চট্টগ্রামেও এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। একজন ড্রাইভার ও আরেকজন কনস্টেবল, তাদেরও আমরা সাময়িক বরখাস্ত করেছি। বিভাগীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। পুলিশও এ বিষয়ে কাজ করছে। এমন আরও যারা আছেন তাদের শনাক্ত করতে আমরা চেষ্টা করছি। আমরা এ ধরণের কোনো কাজকে প্রশ্রয় দেবো না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গৌতম ভট্টচার্য্য যে মহাপরিচালকের অধীনে কাজ করছেন তিনি এক থেকে দেড় মাস আগে এখানে যোগ দিয়েছেন। তার এ কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, এমন আরও কে কে আছেন তাদের বের করতে আমরা চেষ্টায় আছি। আমাদের এ অফিসের ভেতরে এমন আরও কেউ আছেন কী না পুলিশ ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে তা উদঘাটন করার জন্য বলেছি।
এর আগে গত শুক্রবার মতিঝিলের একটি হোটেলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ দাবির পর গৌতমকে ধরতে ফাঁদ পেতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দুদক কর্মকর্তাদের সই জাল করে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের একটি চিঠি তৈরি করে তা নথিভুক্ত না করার আশ্বাস দিয়ে গৌতম ২ কোটি টাকা দাবি করেন। ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর ফাঁদ পেতে তাদের ধরা হয়। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় ‘অন্যের রূপ ধারণ’ করে প্রতারণা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।
আরএম/এফকে