আশুলিয়ার পরিত্যক্ত গলি থেকে বস্তাবন্দি শিশু উদ্ধার
ঢাকার আশুলিয়ায় ইগনাইট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে একটি পরিত্যক্ত গলির ভেতর থেকে গলায় গামছা প্যাঁচানো বস্তাবন্দি অবস্থায় হুমায়রা নামে আড়াই বছরের এক কন্যা শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেছে এক স্কুল শিক্ষক।
শনিবার (২৪ জুন) সকালের দিকে নিখোঁজ হয় শিশুটি। পরে দুপুরে এক স্কুল শিক্ষক দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
আশুলিয়ার জিরাবো পুকুরপাড় এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে শিশুটি।
আহত শিশুর বাবা আজিজুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে আমার মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর দুপুরের দিকে আমরা জানতে পারি- তুহিন নামের এক শিক্ষক গলায় গামছা প্যাঁচানো ও বস্তাবন্দি অবস্থায় আমার মেয়েকে আশুলিয়া ইগনাইট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের গলিতে দেখতে পায়। পরে ওই স্কুল শিক্ষক এগিয়ে গিয়ে দেখে- সে জীবিত আছে। সে তখন তার বোনকে দিয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠায়।
পরে খবর পেয়ে ওই হাসপাতালে গিয়ে আমার সন্তানকে দেখতে পাই। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসি। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) ভর্তির ব্যবস্থা করেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
শিশুটির পিতা আরও জানান,গত ছয় মাস আগে আমার সম্বন্ধীর ছেলেকে প্রতিবেশী শাহিনুর বেগম নামে এক নারী ভাতের ফ্যান দিয়ে তার শরীর ঝলসে দেয়। এই নিয়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। পরে সুস্থ হয়ে উঠলে টাকার বিষয় নিয়ে বাসার মালিকের সঙ্গে বসে একটি সালিশি বৈঠক করা হয়। সালিশি বৈঠক বসাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী শাহিনুর বেগম আমার সম্বন্ধীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ বিষয় নিয়ে আমি প্রতিবাদ করলে আমার সঙ্গেও কথা কাটাকাটি ও একপর্যায়ে গালিগালাজ করে।
এ ঘটনার জেরে শাহিনুর বেগম আমার সন্তানকে মেরে গুম করে ফেলার চেষ্টা করেছে আমাদের ধারণা। আমি এই বিষয়টি থানায় জানিয়েছি। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
আজিজুল ইসলাম আরও বলেন, আমার এই ছোট্ট শিশুটি তো কারো কোন ক্ষতি করেনি। তাহলে আমার এই মেয়েটিকে কেন গলায় গামছা পেঁচিয়ে বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে মেরে ফেলতে হবে। আমার মেয়ের অবস্থা ভালো নয়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, আশুলিয়া থেকে আড়াই বছরের এক শিশুকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। শিশুটির বাবা জানিয়েছে- প্রতিবেশী শাহিনুর বেগম নামে এক নারী তার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় গামছা পেঁচিয়ে বস্তাবন্দি করে রাখে। বর্তমানে জরুরি বিভাগের ওসেকে ভর্তি আছে শিশুটি। আমরা বিষয়টি আশুলিয়া থানাকে জানিয়েছি।
এসএএ/এমজে