কোটি টাকার নিয়োগ, ইসি আহসান হাবিবকে চিঠি দিল কে?
খুলনা বিভাগ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আওতাধীন অফিসগুলোতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তাপ্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও গাড়িচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, এ নিয়োগে নাকি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন খুলনা আঞ্চলিক অফিসের নির্বাচন কর্মকর্তারা!
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খানের কাছে পাঠিয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আবেদন করা আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক ব্যক্তি। আবেদনের পর এসএমএস আসলেও প্রবেশপত্র না আসায় তিনি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। ফলে নিয়োগবঞ্চিত হন এ চাকরিপ্রত্যাশী।
অভিযোগের বিষয়ে কমিশনার আহসান হাবিব ইসি সচিবকে তদন্ত করে নথি উপস্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন। এদিকে, জানা যায় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব বরাবর অভিযোগ দেওয়া নিয়োগবঞ্চিত আব্দুল্লাহ আল মামুন নাকি ওই অভিযোগপত্র পাঠাননি। এ বিষয়ে তিনি নাকি কিছুই জানেন না। বিষয়টি নিয়ে ইসি কার্যালয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে!
ইসি কার্যালয়ে সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচালক পদে সাতজন, নিরাপত্তাপ্রহরী পদে ৪৭ জন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে ৬২ জনকে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এ বিজ্ঞপ্তির অধীনে নিয়োগের লক্ষ্যে ২৮ মার্চ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
চাকরিপ্রত্যাশীরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাকরির আশায় আবেদন করেছিলাম, মোবাইলে এসএমএসও এসেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে অ্যাডমিট কার্ড (প্রবেশপত্র) আর আসেনি। পরে শুনেছি পরীক্ষা হয়ে গেছে। পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেলে হয়ত আমরাও চাকরি পেতাম। তবে, অনেকেই বলেছেন যে নির্বাচন কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে নিজেদের পছন্দ মতো লোক নিয়োগ দিয়েছেন!
আরও পড়ুন : ‘ভুয়া’ সনদে ৪৭ কোটি টাকার কাজ ঠিকাদারের পকেটে!
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব বরাবর চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে অভিযোগকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি তো কোনো অভিযোগ দিইনি। আমি চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। আবেদন সাকসেসফুল দেখিয়েছিল। পরবর্তীতে পরীক্ষার বিষয়ে আর কিছু জানায়নি। ফলে আমি পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে পারিনি। এরপর এ বিষয়ে আর কোনো খোঁজ-খবর রাখা হয়নি।’
আপনি কি নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না আমি কোনো অভিযোগ দিইনি। অভিযোগ দিয়েছি, এটা কীভাবে হলো? আমি তো কিছুই জানি না।’
নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারব না। যখন আমার এসএমএস আসেনি, তখন আর কিছুই করিনি বা জানতেও চাইনি। চিঠির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, তাহলে কীভাবে বলব? আমি নির্বাচন কমিশনার বরাবর কোনো অভিযোগ করিনি। আবেদনের পর দ্বিতীয়বার আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিইনি। তাছাড়া চাকরির জন্য এসএমএস না আসায় আমি ক্ষুব্ধও হইনি বা কোথাও কোনো অভিযোগও করিনি। চাকরিতে কারা কারা আবেদন করেছে, সেটাও আমি জানি না। কে বা কারা আমার নামে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিল, আমি বলতে পারব না।’
‘অভিযোগপত্রে যাদের যাদের নাম লেখা হয়েছে, আমি তাদের কাউকে চিনি না। অভিযোগপত্রে এনআইডি নম্বর ও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে। যেটা আমার চিন্তার বাইরে। কারণ, যাদের আমি চিনি না বা জানি না, তাদের এনআইডি ও মোবাইল নম্বর কীভাবে পাব?’
অভিযোগপত্রে যা বলা হয়েছে
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা বিভাগে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তাপ্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও গাড়িচালক পদে নিয়োগ প্রদানে আর্থিক দুর্নীতি করেছেন খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরির আবেদন করেও অনেকে লিখিত পরীক্ষার এসএমএস পাননি। শুধুমাত্র তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানো হয়েছে এবং তারাই পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। আবার যারা এসএমএস পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই মাস্টার্স পাস এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সহজ হওয়ায় ২৫ নম্বরের মধ্যে ২৫ পেয়েছেন। অথচ পরীক্ষার চূড়ান্ত তালিকায় তাদের নাম নেই।
অন্যদিকে, লেখাপড়া জানেন না, নিজের নামও ঠিক মতো স্বাক্ষর করতে পারেন না, যেমন- খুলনা জেলার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম. মাজহারুল ইসলামের গৃহকর্মী রেহেনা বেগম, রোল নম্বর: ১১২, পদবি : পরিচ্ছন্নতাকর্মী; এমন প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসব পরীক্ষার্থীকে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা বলেছেন, শুধুমাত্র পরীক্ষার খাতায় নাম, পদের নাম ও রোল নম্বর লিখে সাদা খাতা জমা দিতে। পরবর্তীতে নিয়োগ কমিটি তাদের পছন্দের প্রার্থীদের জমা দেওয়া সাদা খাতা পূরণ করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : এনআইডি সংশোধন : বৈধ কাগজেও বছরের পর বছর পার
খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর ও তার অনুগত নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে এবং তার অনুগত কয়েকজন জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে উক্ত নিরাপত্তাপ্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও গাড়িচালক পদে নিয়োগে প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এক নিয়োগে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা প্রায় এক কোটি টাকার অধিক নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এ নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খোঁজ নিলে সত্যতা পাওয়া যাবে— উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।
যাদের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য, যা বলা আছে
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, খুলনা আঞ্চলিক অফিসের নির্বাচন কর্মকর্তারা এ নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা লেনদেন করেছেন। তারা হলেন- খুলনা জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা এম. মাজহারুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বজলুর রশিদ, খুলনা সদর থানা নির্বাচন কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ, যশোর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাদল চন্দ্র অধিকারী এবং ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কল্লোল বিশ্বাসসহ অনেকে।
অবশ্যই সিলেক্ট করতে হবে, নোট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার
খুলনা জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা এম. মাজহারুল ইসলাম গৃহকর্মী রেহেনা বেগমকে (রোল নম্বর : ১১২) পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ দিয়েছেন। জানা যায়, তিনি (রেহেনা বেগম) নিজের নাম পর্যন্ত ঠিক করে লিখতে পারেন না। এছাড়া, খুলনা জেলার তৎকালীন সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলাম সুপারিশ করে ১৩ জনের একটি তালিকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাঠান। যেখানে লেখা ছিল ,‘অবশ্যই সিলেক্ট’ করবেন।
চিঠিতে যা লেখা হয়েছে সবকিছুই অফিসিয়াল সিস্টেমে হয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চাকরিপ্রত্যাশী কেউ এত নির্ভুলভাবে চিঠি লিখতে পারেন না। হয়ত আমাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারে।
নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত ১৩ জন হলেন- পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রদীপ কুমার দাস, মো. হুসাইন আহমেদ, কপোত হালদার, মো. আল আমিন, তাসলিমা খাতুন, রেহেনা খাতুন, মো. আতিকুর রহমান, মুকলিমা খাতুন, পাভলী বালা, নির্মল কির্ত্তনীয়; নিরাপত্তাপ্রহরী প্রকাশ চন্দ্র মণ্ডল, বিপ্লব মণ্ডল ও অনুপ পোদ্দার।
এসএমএস পেয়েও প্রবেশপত্র পাননি অনেকে
আবেদনকারী অনেকে মোবাইল ফোনে এসএমএস পান কিন্তু তাদের প্রবেশপত্র আর আসেনি। তাদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. ইয়াছিন হোসেন, নাহিদ হাসান, মো. তারিফুজ্জামান ও মো. পলাশ আহমেদ; নিরাপত্তাপ্রহরী পদে মো. আমিন উদ্দীন ও মো. সবুজ হোসেনসহ অনেকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে আবেদন করা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, আমির পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আমাকে তারা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেয়নি। মানে, আমার অ্যাডমিট কার্ড (প্রবেশপত্র) তারা দেয়নি। ফলে আমি পরীক্ষা দিতে পারিনি।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় চাকরিপ্রত্যাশী মো. ইয়াছিন হোসেনের। তিনি বলেন, আমি পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চাকরির আশায় আবেদন করেছিলাম। পরবর্তীতে আমার আবেদনটি তারা গ্রহণ করে এবং আমার ফোনে এসএমএস পাঠায়। সেখানে বলা হয়, আপনার আবেদন সফলভাবে জমা হয়েছে। কিন্তু আমাকে পরীক্ষায় ডাকেনি তারা। পরীক্ষাও দেওয়া হয়নি। তবে পরে শুনেছি, কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে নিজেদের লোককে চাকরি দিয়েছেন।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হয় আরেক চাকরিপ্রত্যাশী মো. সবুজ হোসেনের। তিনি বলেন, আমি নিরাপত্তাপ্রহরী পদে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। তারা আবেদন গ্রহণও করে, এসএমএসও পাঠায়। কিন্তু পরবর্তীতে পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাঠায়নি, আমাদের পরীক্ষাও দেওয়া হয়নি। নির্বাচন অফিস সুযোগ না দিয়ে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করেছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের অভিযোগপত্রটি দেখিয়ে ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, এত স্বচ্ছ একটি অভিযোগপত্র পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদের চাকরিপ্রত্যাশী লিখতে পারেন কি না? জবাবে কর্মকর্তারা জানান, চিঠিতে যা লেখা হয়েছে সবকিছুই অফিসিয়াল সিস্টেমে হয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চাকরিপ্রত্যাশী কেউ এত নির্ভুলভাবে চিঠি লিখতে পারেন না। হয়ত আমাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারে।
অভিযুক্ত খুলনা জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা এম. মাজহারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই আমার বাসার গৃহকর্মীর চাকরি হয়েছে। অভিযোগটি যেই করুক, এর সত্যতা নেই। যদি কমিশন তদন্ত করে প্রমাণ পায়, তাহলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব।
কোটি টাকার বাণিজ্যের বিষয়ে খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘চিঠিটা কি আপনার কাছে আছে? থাকলে আপনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জিজ্ঞেস করেন যে আমার সঙ্গে তাদের পরিচয় আছে কি না বা তারা আমাকে কিছু দিয়েছে কি না? মাজহারুল সাহেবের গৃহকর্মী যদি চাকরি পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি তাকে প্রশ্ন করেন। তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করতে পারবেন।’
‘যে কোনো প্রফেশনে যে কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। যদি অভিযোগের সত্যতা থাকে তাহলে তার অধিকার আছে অভিযোগ করার। কমিশনার স্যার যদি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে থাকেন, তাহলে সচিব মহোদয় ব্যবস্থা নেবেন। তাহলে এখানে আমার আর কোনো বক্তব্য নেই। যেহেতু কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছে, তারা আমার কাছে জানতে চাইলে আমি জবাব দেব।’
অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়ে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান নোট লিখে ইসি সচিবের কাছে সেটি পাঠিয়ে দেন। নোটে আহসান হাবিব লেখেন, ‘অভিযোগটি যদি সত্য হয় তবে তা গর্হিত অপরাধ। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা যাচাই পূর্বক নথিতে উপস্থাপন করুন।’
বিষয়টি জানতে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ঢাকা পোস্ট। তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এসআর/এসকেডি/এমএআর/