খান জাহান আলী বিমানবন্দর আর হচ্ছে না
অবশেষে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) থেকে মুক্তি পেল বাগেরহাটের খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প। এর ফলে এই বিমানবন্দরটি আর হচ্ছে না বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন পরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার শাখা) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার শাখা) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বিস্তারিত জানান।
সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়াতে বাগেরহাটে আর বিমানবন্দর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ এই বিমানবন্দর নির্মাণে অনেক বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। যেহেতু পিপিপিতে কোন বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়নি সেহেতু এটি আর করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাগেরহাটের খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি পিপিপি তালিকা থেকে প্রত্যাহার সংক্রান্ত প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
আরও পড়ুন : ২৭ বছর ধরে চলছে খান জাহান আলী বিমানবন্দরের কাজ
জানা যায়, খুলনা বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ২৫ মিনিটের দূরত্বে বাগেরহাটের রামপালের ফয়লাহাটে নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল খান জাহান আলী বিমানবন্দরের। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে বিমানবন্দরটি নির্মাণের কথা বলা হলেও কার্যকর বিনিয়োগকারী না পাওয়ায় প্রকল্পটি স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বাগেরহাটের রামপালে সর্ট টেক অব ল্যান্ডিং বিমানবন্দর চালু করতে ৯৮ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এরপর থেকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে এই বিমানবন্দরের উন্নয়নের কাজ। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরটির উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় উদ্যোগ নেয় বিমানবন্দর নির্মাণের।
২০১১ সালে খান জাহান আলী নামে একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৫ সালে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়। খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পাশে রামপালের ফয়লাহাট এলাকায় নতুন করে অধিগ্রহণ করা হয় ৫৩৭ একর জমি। একই বছরের জুলাইয়ে ফের শুরু হয় প্রকল্পটির কাজ। সর্বশেষ জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে অধিগ্রহণকৃত জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করে। এরপর ন্যাশনাল ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের মে মাস থেকে বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীরের নির্মাণকাজ শুরু করে। কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী ও মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হলেও অজ্ঞাত কারণে নির্মাণকাজ আবারও থমকে যায়।
এসআর/এসকেডি