‘শিক্ষক’ আরাফাতের আয় কোটি টাকার বেশি
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের বছরে আয় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর প্রায় পুরোটাই তিনি শিক্ষকতা থেকে আয় করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া তার হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হলফনামায় মোহাম্মদ আরাফাত শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে এমবিএ উল্লেখ করেছেন আর পেশা বলেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা। আরাফাতের পিতার নাম মোহাম্মদ সেতাব উদ্দীন, মাতা হাবিবুর নিসা।
শিক্ষকতা পেশা থেকে বছরে আয় করেন ১ কোটি ২৭ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৫ টাকা, ব্যাংকের আমানত থেকে সুদ পান ৯২ হাজার ৪৭৭ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার ১৫৬ টাকা। ব্যাংকে নিজের নামে তিন কোটি ৪৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬০৬ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে এক কোটি ১০ লাখ টাকা। এছাড়া, নিজ নামে ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৯৯ টাকার শেয়ার আছে।
আরাফাতের নিজের নামে সঞ্চয়পত্রে স্থায়ী আমানত ৩০ লাখ টাকা, ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকার গাড়ি, ছয় লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। আছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার অ্যাপার্টমেন্ট। আরাফাতের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলেও হাউজ ফাইন্যান্সে ১ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৬ টাকা ৯০ পয়সা এবং স্ত্রীর নামে অপরিশোধিত শেয়ারে আট লাখ টাকা ঋণ আছে।
জাপা প্রার্থীর নামে তিন মামলা
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থী প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমানের আয় কম হলেও তার নামে মামলা রয়েছে তিনটি। এছাড়া অতীতে একটি মামলা খারিজ হয়েছে, আর একটি আপোষ নিষ্পত্তি হয়েছে।
বিএসসি পাশ এই প্রার্থীর ঠিকানা- ৫৬/২ মাটিকাটা সড়ক, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট। অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তার বর্তমান পেশা ব্যবসা। বাড়ি ভাড়া, ব্যবসা ও পেনশন থেকে বছরে তার আয় ১৫ লাখ ১৮৩ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় দুই লাখ চার হাজার টাকা।
আনিসুর রহমানের কাছে নগদ আড়াই লাখ ও স্ত্রীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা আছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে ৫৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৭০ হাজার টাকা ও ৫ তোলা স্বর্ণালংকার আছে।
এছাড়া ১৭ লাখ টাকার গাড়ি ও সাত লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং আসবাবপত্র রয়েছে জাপা প্রার্থীর। আবার ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকার অকৃষি জমি, ২৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকার অ্যাপার্টমেন্ট ও স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ টাকার অ্যাপার্টমেন্ট আছে।
এ নির্বাচনে মোট ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে বাছাইয়ে সাত প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। অবশিষ্ট আট প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
যাদের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে তারা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরপন্থী সিকদার আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, গণতন্ত্রী পার্টির মো. কামরুল ইসলাম (চেয়ারম্যান মনোনয়ন দিয়েছে), গণতন্ত্রী পার্টির অশোক কুমার ধর (মহাসচিব মনোনয়ন দিয়েছে), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট'র মো. আকতার হোসেন ও তৃণমূল বিএনপি’র শেখ হাবিবুর রহমান।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা হলেন- জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদপন্থী মো. মামুনূর রশিদ, মো. তারিকুল ইসলাম ভূঞাঁ ( স্বতন্ত্র), আবু আজম খান (স্বতন্ত্র), আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), মুসাউর রহমান খান (স্বতন্ত্র), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট'র (বিএনএফ) মো. মজিবুর রহমান ও শেখ আসাদুজ্জামান জালাল।
তফসিল অনুযায়ী, উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন। প্রতীক বরাদ্দ ২৬ জুন। ভোটগ্রহণ হবে ১৭ জুলাই।
এসআর