মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর জামাতাকে ভিআইপি প্রটোকল দেওয়ার নির্দেশ
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর মেয়ের জামাইকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার, কাস্টমস ব্যাগেজ, ইমিগ্রেশনসহ অন্যান্য প্রটোকল দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বিমানবন্দরের পরিচালককে দেওয়া চিঠিটি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মন্ত্রীর জামাতা বিমানবন্দরে কীভাবে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারসহ অন্যান্য প্রটোকল পান, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
জানা গেছে, গত ৬ জুন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করা হয়। পরে ৭ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালককে চিঠিটি পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখার উপসচিব ড. অমিতাভ চক্রবর্ত্তী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হকের মেয়ের জামাতা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ৯ জুন শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট নম্বর EK 586 তে দুবাই থেকে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।
তাকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতিসহ মন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার মশিউর রহমানকে কাস্টমস ব্যাগেজ, ইমিগ্রেশন এবং বিমানবন্দরের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য বোর্ডিং ব্রিজ পাস দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিমানবন্দর পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্ত্রীর জামাতা বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারসহ অন্যান্য প্রটোকল পায় কি না, জানতে চাইলে উপসচিব ড. অমিতাভ চক্রবর্ত্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মন্ত্রীর জামাতা যখন দেশে আসেন মন্ত্রী তাকে আনতে যান। তাই আমরা চিঠি দিয়েছি। মন্ত্রী শুক্রবার তাকে আনতে বিমানবন্দরে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নে উপসচিব বলেন, তিনি যাবেন কি না আমি জানি না। মন্ত্রীর মেয়ে দেশে এলেও এ ধরনের চিঠি আমরা দিয়ে থাকি। তাহলে কীসের ভিত্তিতে এই চিঠি দিয়েছেন এর সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গুরুত্বপূর্ণ ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য পৃথক লাউঞ্জ রয়েছে। যেটাকে ভিআইপি লাউঞ্জ বলা হয়। ভিআইপি লাউঞ্জ কারা ব্যবহার করতে পারবেন এমন একটি স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরে ৪টি ভিআইপি লাউঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো- লাউঞ্জ রজনীগন্ধা, বকুল, দোলনচাঁপা ও চামেলি। রজনীগন্ধা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ভিআইপিরা ব্যবহার করেন। বকুল ব্যবহার করেন অতিরিক্ত সচিব বা তার পদমযার্দার ও সমমর্যাদার ব্যক্তিরা। দোলনচাঁপা ব্যবহার করেন সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আর চামেলি দিয়ে একুশে পদক পাওয়া ব্যক্তি, সংবাদপত্রের সম্পাদক ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা প্রবেশ ও বের হতে পারেন।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার দলীয় নেতা, এমপি, মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজন, আমলারা বিধি না মেনে ব্যবহার করছেন।
এনএম/জেডএস