ঘূর্ণিঝড় মোখা : চট্টগ্রামে ‘গুমোট’ পরিস্থিতি
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সকাল থেকে চট্টগ্রামের আকাশ মেঘলা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। তবে তা পরিমাণে খুবই কম এবং স্থায়িত্বও বেশিক্ষণ থাকছে না। বাতাসের গতিবেগও তেমন বেশি না। অনেকটা গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সকাল ১০টা থেকে বৃষ্টিপাত এবং বাতাসের গতিবেগ বাড়বে বলে জানা গেছে। বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রামে জোয়ার আরম্ভ হবে। এসময় পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার বাসিন্দা রাইসুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাস তেমন নেই। অনেকটা থমথমে অবস্থা। মনে হচ্ছে একটু পর যুদ্ধ শুরু হবে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একজন কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে কক্সাবাজার, টেকনাফ ও মিয়ানমারের উত্তর উপকূল। চট্টগ্রাম ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত, বাতাস এবং জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধস হতে পারে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৫ জন। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ৫৯৫ পুরুষ, ৩৮ হাজার ৯৭৬ নারী, ১১ হাজার ৩৪৯ শিশু ও ১৪৫ প্রতিবন্ধী লোক রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, জেলায় মোট ২৫০ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাধ আছে। তন্মধ্যে ১২ দশমিক ৭ কিলোমিটার বাদে বাকি অংশ সুরক্ষিত রয়েছে। জেলায় দুটি সিএসডি এবং ১৬টি এলএসডি রয়েছে। মজুতকৃত খাদ্যশস্যের সুরক্ষার জন্য কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। গুদামের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ ঠেকাতে বাফেল ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। জেটি থেকে বড় জাহাজ বের করে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে লাইটার জাহাজকে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় নিরাপদে অবস্থান নিতে বলা হয়। এছাড়া মোখার কারণে শনিবার ভোর ৬টা থেকে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকবে। আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এমআর/এসএম