বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ৪২০০, আগুন সিগারেট বা কয়েল থেকে
বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সব মার্কেট ও ইউনিট থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। একটি ইউনিটের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দেরিতে জমা দেওয়ায় আজ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
সোমবার (১০ এপ্রিল) রাতে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, জ্বলন্ত সিগারেট বা মশার কয়েল থেকে বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করছে ডিএসসিসির তদন্ত কমিটি। তাদের ধারণা, কমপ্লেক্সের আদর্শ ও মহানগর মার্কেটের মধ্যের কোনো জায়গায় আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগার কোনো আলামত পায়নি কমিটি।
এর আগে, বঙ্গবাজারে সংগঠিত অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে আট সদস্যের কমিটি গঠন করে ডিএসসিসি। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ডিএসসিসির অঞ্চল ১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। এছাড়া প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- ডিএসসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর (১৩, ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ড), ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, সম্পত্তি কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি এবং পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর)।
এদিকে আগুন লাগার সময় মার্কেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রহরী, ইলেকট্রিশিয়ান, কর্মরত ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতাসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছে কমিটি।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মহানগর মার্কেট সংলগ্ন আদর্শ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় একটি এমব্রয়ডারি কারখানায় প্রথমে আগুন লাগতে পারে। কারখানার কাছাকাছি কোনো বিদ্যুৎ বিতরণ বাক্স ছিল না। নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গা ছাড়া পুরো মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। মার্কেট দুটির বিদ্যুতের লাইন ধারাবাহিকভাবে রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। শুধু নিরাপত্তা প্রহরীদের থাকার জায়গা, মসজিদ ও মার্কেট অফিসে লাইট জ্বলছিল। এছাড়া ওয়াইফাইয়ের রাউটার চালু ছিল।
তদন্ত কমিটির ধারণা, আদর্শ মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার কক্ষ ছিল। সেই কক্ষের নিচে ছিল এমব্রয়ডারি কারখানা ও গুদাম। সেহরির সময় তৃতীয় তলা থেকে সিগারেটের জ্বলন্ত অংশ দ্বিতীয় তলায় পড়তে পারে। এতে এমব্রয়ডারি কারখানা বা গুদামে আগুন লাগতে। এছাড়া নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার স্থানে জ্বলন্ত মশার কয়েল থেকেও আগুন লাগতে পারে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে ডিএসসিসির মুখপাত্র আবু নাছের ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সন্ধ্যায় বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা পাওয়া গেছে। একটি ইউনিটের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা আজ বিলম্বে জমা দিয়েছে। তাই তদন্ত কমিটি আজ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি। কমিটি আগামীকাল চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা আনুমানিক ৪ হাজার ২০০ জন। তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রতিবেদন দাখিলের পর জানানো হবে। অবশ্য এ তালিকায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেট এনেক্স কো’র ব্যবসায়ীদের নাম নেই। এসব ব্যবসায়ীদের ইন্স্যুরেন্স করা আছে বিধায় তারা তালিকায় নাম দিতে চাননি।
এএসএস/কেএ