গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্তে সিভিল এভিয়েশনকে বোনের আহ্বান
গালফ এয়ারের পাইলট মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মৃত্যুর তদন্ত এবং বিমান সংস্থাটির অবহেলার জন্য ব্যবস্থা নিতে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের (সিএএবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বোন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা এলহেনডি।
সোমবার (৪ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তালা এলহেনডি।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় তার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।
>> গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু : ইউনাইটেড হসপিটালের প্রতিবাদ
তিনি বলেন, ‘আমি ৭ মার্চ সিএএবিকে ই-মেইল করে দায়িত্বে অবহেলার জন্য গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্ত করার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এভিয়েশন অথরিটি বিষয়টি নিয়ে কোনো উত্তর দেয়নি।’
গত ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাইলট ইউসুফ হাসান আল হিন্দি। ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালকে দায়ী করে হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিল এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তালা।
সংবাদ সম্মেলনে এলহেনডি জানান, গত বছর ১৪ ডিসেম্বর রাতে তার ভাই ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন। রাত পৌনে ৩টার দিকে উঠে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হন। ভোর ৪টার দিকে তিনি বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়ার মাঝে পড়ে যান।
>> ইউনাইটেড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় বিদেশি পাইলটের মৃত্যুর অভিযোগ
ঘটনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে এলহেনডি বলেন, ‘যখন আমার ভাইয়ের মরদেহ আসে, তখন গালফ এয়ারের কর্মীরা সেখানকার ডাক্তারদের রিপোর্ট দেখায়নি। তারা থাকলে, ডাক্তাররা কর্মীদের বলত যে, রিপোর্টগুলো সঠিক নয়। যেহেতু তারা তা করেনি।
তালার দাবি, এর পেছনে একটি খারাপ উদ্দেশ্য ছিল এবং তারা তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছিল।
এলহেনডি আরো বলেন, গালফ এয়ার তার ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে সঠিক যুক্তি খুঁজে না পেয়ে তাড়াহুড়া করে তার ভাইকে কবর দিয়েছে।
তিনি বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর পেছনে গালফ এয়ারের ভূমিকা তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা চেয়ে গত ২৮ মার্চ সিএএবির বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন দায়ের করি।
উল্লিখিত রিট পিটিশনের জন্য একটি স্লিপ ২ এপ্রিল হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি যথাসময়ে হাইকোর্টে শুনানির জন্য আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
>>গালফ এয়ারের পাইলটের মৃত্যু : আদালতে যাওয়ার পরামর্শ
এলহেনডির মতে, ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং গালফ এয়ার উভয় কর্তৃপক্ষেরই অবহেলা ছিল। গালফ এয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তখন তারা তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসেছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তার ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনাটি ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে তার প্রয়াত ভাইয়ের মামলা সংক্রান্ত তথ্য এবং নথি বের করার চেষ্টা করেন তালা এলহেনডি। কিন্তু তিনি হাসপাতালের কোনো সহযোগিতা পাননি বলে দাবি করেন।
ভাইয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশে ছুটে এসে খোঁজ-খবর নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার প্রমাণ পান বলে জানান সাংবাদিকদের।
গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় এলহেনডি তার আইনজীবী নিয়ে গুলশান থানায় এজাহার করার জন্য গেলেও থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি। পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করতে অস্বীকার করে। পরে ১৪ মার্চ ঢাকা মহানগর ২১ নম্বর আদালতে মামলা করেন এলহেনডি।
আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এপ্রিল সময় ধার্য করা থাকলেও পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল না করে এ বিষয়ে সময় চেয়েছে।
জেইউ/এমএ