গিনেজ রেকর্ডসে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে আরেকটি সফলতা যোগ হলো। শস্যখেতের বিশাল ‘ক্যানভাসে’ ফুটিয়ে তোলা বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক প্রতিকৃতিটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইটে এ রেকর্ডটি যুক্ত হয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন এ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যার দিকে আমরা দাফতরিকভাবে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তারা তাদের ওয়েবসাইটে বিষয়টি অন্তভূর্ক্ত করেছে। গত ৯ তারিখে এ বিষয়ে তারা যেসব তথ্য জানতে চেয়েছে তা পাঠানো হয়। তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে আজকে তারা অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করছিলাম যে তারা তাদের ওয়েবসাইটে দেয় কি-না। ওয়েবসাইটে লিখেছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় রাখতেই তারা ১৭ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা বা তাদের ফরমালাটি মেইনটেইন করবে।’
লাল সবুজের ধানের চারায় জাতির পিতার চিত্র ফুটিয়ে তোলার এ কর্মযজ্ঞ চলছে বগুড়ার শিবগঞ্জের শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে। এটি ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্য চিত্র’। ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৩০ মিটারের এ নান্দনিক শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে ওয়ার্ল্ড গিনেস রেকর্ডের পক্ষ থেকে আসা প্রতিনিধিরা মাঠ পরিদর্শন করেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের মনোনীত প্রতিনিধিরা হলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী।
অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ এই প্রতিনিধি দলের প্রধান। তিনি বলেন, ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা মোজাইক স্কেচের তৈরি বঙ্গবন্ধুর শতভাগ মিল রয়েছে। স্কেচে ব্যবহার করা হয়েছে দুই ধরনের রং, যা এই শস্যচিত্রের রঙের হুবহু। এটি একটি ক্রপ ফিল্ড মোজাইক। এখানে কোনো কৃত্রিমতা নেই। শস্যের অবস্থান রয়েছে নির্দিষ্ট স্থানগুলোয়। প্রতিটি ধানগাছের চারার দূরত্ব ৮ ইঞ্চি, যা রোপণের সঠিক পরিমাপ।
তিনি আরও বলেন, ‘গিনেস রেকর্ডসে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর এই প্রতিকৃতি স্থান পেতে হলে অবশ্যই শস্যের ৪০ ভাগ হবে বেজ, আর ৬০ ভাগ হতে হবে মূল ইমেজ। সেটি ঠিক আছে কি না, তার সঠিক তথ্য দেবেন সার্ভেয়ার। এই শস্যচিত্র দেখে আমরা শতভাগ সন্তুষ্ট হয়েছি। আজকের প্রতিবেদন আমরা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের প্রধান কার্যালয় ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেব। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্য সিদ্ধান্ত আসবে।’
উল্লেখ্য, দুই মাস আগে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের ব্যানারে ১০৫ বিঘা জমিতে এ কাজের প্রস্তুতি শুরু হয়। কোনো নেতার গিনেজ বুকের ‘লার্জেস্ট ক্রপ ফিল্ড মোজাইক (ইমেজ)’ শাখার নতুন রেকর্ড হলো এটি। এর আগের রেকর্ডটি ছিল চীনের দখলে। ১৯১৯ সালে ৭৯ হাজার ৫০৫ দশমিক ১৯ বর্গমিটার আয়তনের জমিতে চার রঙের ধানের চারায় কাউ ফিশের ছবি ফুটিয়ে তোলে সাংহাইয়ের লেজিদাও টুরিজম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিডেট।
একে/এসকেডি