প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে, পরশু উঠছে বইমেলার পর্দা
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাতুড়ি-পেরেকের টুং-টাং শব্দই বইমেলা শুরুর কথা জানান দিচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে এবারের ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ দেড় মাস পিছিয়ে ১৮ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। সে হিসাবে আর মাত্র একদিন পরই উঠতে যাচ্ছে বইমেলার পর্দা।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন করবেন। মেলা চলবে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে স্টল, প্যাভিলিয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে কারিগরদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
ইতোমধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রকাশকদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন বুঝিয়ে দিয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষ। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার ভিড় এড়াতে স্টলগুলোর মধ্যে দূরত্ব যেমন বেড়েছে তেমনি স্টলের সামনে রাখা হয়েছে ফাঁকা জায়গা। গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে এবার প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুটের বিশাল বিস্তৃতি পাচ্ছে বইমেলা।
গত কয়েকদিন ধরে করোনার প্রাদুর্ভাব ঊর্ধ্বমুখী দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী- এমন প্রশ্নে আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মানা এখন আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ। স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মানতে কী কী করতে হবে, সে বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, পাঠক, ক্রেতা, বিক্রেতা, প্রকাশক ও লেখক- সবাই আমরা সচেতন থাকব। তাড়াহুড়ো করব না। আমাদের যে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করার কথা, সব ক্ষেত্রে আমরা সেটি রক্ষা করব। গ্রন্থ উন্মোচনের ক্ষেত্রে আমরা হুমড়ি খেয়ে পড়ব না, দূরত্ব বজায় রাখব। এখান থেকে যেন করোনা সংক্রমণের কোনো ঢেউ সৃষ্টি না হয়, আশঙ্কা তৈরি না হয়, সে দিকে আমরা সচেতন থাকব।
শাহবাগ থেকে টিএসসি, বাংলা একাডেমির সামনে দিয়ে দোয়েল চত্বরের রাস্তায় পুরোদমে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। সেজন্য শাহবাগ থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দোয়েল চত্বর। এ কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং এটি মেনে নিয়েই হবে এবারের মেলা।
বইমেলা প্রাঙ্গণে এখন চলছে সাজসজ্জার কাজ। আবদুর রহমান নামের এক কারিগর ঢাকা পোস্টকে জানান, আমাদের কাজ শেষের দিকে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ করছি। কাল থেকেই আমাদের স্টল মেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
এবারের মেলায় ৫২২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। সবমিলিয়ে মেলায় স্টলের ইউনিট দাঁড়াবে আট শতাধিক। বাংলা একাডেমিসহ মোট প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৩টি। মাসব্যাপী এ আয়োজনে থাকছে গান, কবিতা, আবৃত্তি, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবার স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় খোলা না থাকায় প্রকাশকরা কিছুটা উদ্বিগ্ন। তবে মেলা নিয়ে তারা আশাবাদী।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মেলার এ আয়োজন নিয়ে প্রত্যাশা কী- জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি একটি সাংবাৎসরিক সাংস্কৃতিক উৎসব। এবার আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব চলছে। এই দুই উপলক্ষ সামনে রেখে বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সবার প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আমাদের প্রত্যাশা বইমেলা সফল ও সুন্দর হবে।
এসআই/আরএইচ/এমএমজে