জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত শহীদ মিনার
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অগণিত মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। কয়েক ঘণ্টা পরেই ফুলে ফুলে ভরে উঠবে শহীদ মিনার। স্মরণ করা হবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, দেয়াল লিখন, আলপনা ও দেয়াল চিত্রে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ফুটে উঠেছে ১৯৫২ সালের সেই কঠিন দিনগুলোর আবহ। শহীদ মিনার ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। স্তরে স্তরে বিভিন্ন বাহিনীর নজরদারি চলছে। শেষ মুহূর্তের পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তা আলপনার রাঙানো হয়েছে। আশপাশের রাস্তার দেয়ালে নতুন রঙ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন>>>একুশের চেতনার ফসল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
করোনা মহামারিতে জনসমাগম এড়াতে গত দুই বছর সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুইজন একসঙ্গে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের নির্দেশনা থাকলেও এবার সে বিধিনিষেধ থাকছে না।
আরও পড়ুন>>>শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আ.লীগের কর্মসূচি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, একুশে ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতারা। এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধানেরা, ভাষা সৈনিকবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিনবৃন্দ ও হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ। এরপর সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধাঞ্জলি। অর্পণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত থাকবে।
আরও পড়ুন>>>শহীদ দিবস উপলক্ষে ডিএমপির ট্রাফিক নির্দেশনা
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, সর্বস্তরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে শুধুমাত্র প্রস্থান করা যাবে, শহীদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।
আরও পড়ুন>>>একুশের সম্মানে হেঁটে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে মৃণাল দাস
এছাড়া, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আজিমপুর কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য একটি রুট-ম্যাপও প্রণীত হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। শহীদ মিনার এলাকায় কোনো মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না, কোনো ব্যানার, পোস্টার বা ছবি টাঙানো যাবে না। শহীদ মিনারের প্রবেশপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
আরও পড়ুন>>>একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে জঙ্গি হামলার হুমকি নেই : ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও একুশে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অতিথিরা আসবেন। চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি, কোথাও কিছু করার প্রয়োজন আছে কিনা সেগুলো এখন দেখা হচ্ছে এবং সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>>আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস : নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে শহীদ মিনার এলাকা
এদিকে আজ সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবসে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সর্বোচ্চ নজরদারি থাকবে।
এইচআর/এমএ