তিন দাবিতে রিকশা-ইজিবাইক চালকদের সমাবেশ
ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকসহ তিন চাকার যান্ত্রিক যানবাহনের নকশা আধুনিকায়ন ও নীতিমালার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ সময় লাইসেন্স দেওয়া, বিকল্প ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থান ছাড়া প্যাডেল রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক উচ্ছেদ বন্ধসহ তিন দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।
সোমবার (১৫ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসব দাবিতে সমাবেশ করেন রিকশা শ্রমিকরা। সমাবেশ শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবেন বলে জানান তারা। রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রায় ছয় বছর ধরে নকশা আধুনিকায়ন ও নীতিমালার দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু প্রায় ৫০ লাখ চালকের এ দাবি কোনোভাবেই সরকার আমলে নিচ্ছে না। এই আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিবসহ সারাদেশে অনেক নেতাকর্মী হামলা ও মামলারও শিকার হয়েছেন। কিন্তু আমাদের কথা সরকার শুনছে না।
তারা বলেন, বৃষ্টি, শীত, কুয়াশা উপেক্ষা করে সারাদেশে দিনে-রাতে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন করছে রিকশা, ব্যটারিচালিত বা যান্ত্রিক রিকশা ও ইজিবাইক চালকরা। প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে প্রায় ৩২ লাখ রিকশা-ভ্যান এবং প্রায় ১৫ লাখ ব্যাটারিচালিত যান্ত্রিক যানবাহন রিকশা ও ইজিবাইক চালানোর সঙ্গে যুক্ত। এর বাইরে সারা দেশে প্রায় পাঁচ লাখ রিকশার গ্যারেজ মালিক, মেস মালিক, ব্যাটারি চার্জার দোকানি, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের মেকানিক ও রিকশা-ভ্যান মেকানিক এ পেশায় বা ব্যবসায় যুক্ত আছেন।
সমাবেশ থেকে জানানো হয়, গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত এই তিন চাকার যান্ত্রিক যানবাহন এখন মানুষের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ৫০ লাখ মানুষের আত্মকর্মসংস্থান ও তাদের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ। ৫০ লাখ মানুষ দিনে গড়ে ৫০০ টাকা আয় করলে প্রতিদিন ২৫০ কোটি, মাসে সাত হাজার ৫০০ কোটি, বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা আয় করছে এসব চালকরা।
আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৫০ লাখ মানুষের আয় এবং একে ঘিরে বিভিন্ন বিনিয়োগ ও ব্যবসাকে হিসেব করলে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন এর সঙ্গে যুক্ত। যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিরও গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
সমাবেশে দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেট, গাজীপুর, ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চালকরা অংশ নেন। এসব এলাকায় প্রশাসনিক হয়রানি, হামলা, নির্যাতন, তোলাবাজি-চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানান তারা।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকসহ অনেকে।
একে/এফআর