এজেন্টের খাতা থেকে তথ্য চুরি করে প্রতারণা
বিকাশে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, শিমুল মিয়া (২৯), শাহিন মাতুব্বর (২৮) ও এমডি মহিদুল (২৬)।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল আহাদ জানান, বিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্যরা মূলত ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতারণা করে থাকে।
তিনি বলেন, প্রথম গ্রুপ মাঠ পর্যায়ে অবস্থান করে বিভিন্ন দোকানে টাকা বিকাশ করার কথা বলে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে আগের লেনদেন করা বিকাশ খাতার ছবি তুলে নেয় তারা। পরে ওই ছবি হোয়াটসঅ্যাপে দ্বিতীয় গ্রুপের কাছে স্থান উল্লেখ করে পাঠিয়ে দেয়।
দ্বিতীয় গ্রুপ পাঠানো খাতা থেকে পাওয়া বিভিন্ন নম্বরে বিকাশ দোকানদার সেজে কল করে এবং জানতে চায় যে, তাদের কাছে পাঠানো টাকা তারা পেয়েছেন কিনা এবং ক্যাশ আউট করেছেন কিনা। যদি বলে পেয়েছে কিন্তু টাকা তুলেনি বা ক্যাশ আউট করেনি তখন প্রতারকরা তাদের প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার শুরু করে। প্রতারক ওই বিকাশের গ্রাহককে বলতে থাকে যে, আমার দোকান হতে একই সময়ে কয়েকটি নাম্বারে পাঠানো টাকা নিয়ে অভিযোগ আসায় তাদের নাম্বার লক করতে গিয়ে আপনার নাম্বারও লক হয়ে গেছে। আপনাকে বিকাশ অফিস হতে ফোন করে আনলক করে দেবে।
অল্প সময়ের ব্যবধানে তৃতীয় গ্রুপ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস অফিসার পরিচয় দিয়ে, অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বিকাশ অফিসের নাম্বার ক্লোনিং করে ফোন দেয়। ফোন করে বিভিন্ন কথার ছলে ওটিপি এবং বিকাশ পিনকোড নিয়ে নেয়। পরবর্তী সময়ে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারক চক্র অ্যাকাউন্ট আনলক করার কথা বলে ভিকটিমের বিকাশ অ্যাকাউন্ট এবং প্রতারক চক্রের বিকাশ অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা দিতে বলে।
এভাবে হাতিয়ে নেওয়া টাকা মাঠ পর্যায়ে থাকা সর্বশেষ অর্থাৎ চতুর্থ গ্রুপ এর নিকট পাঠানো হয়। যারা বিভিন্ন হাত বদল করে ক্যাশ আউট করে, ফলে প্রতারকদের অবস্থান শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, বিকাশ কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের তথ্য চাইলেও কখনো পাসওয়ার্ড চায় না। কিন্তু প্রতারকরা পিন কোড ও পাসওয়ার্ড চায়। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের সচেতন থাকলে নিজের বিকাশ একাউন্ট সুরক্ষিত থাকে। সঙ্গে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারক চক্রকেও ধরা যায়।
গ্রেফতারদের মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
জেইউ/এমএইচএস